সংক্ষিপ্ত
এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাজার সরগরম করে রেখেছে ডাবল ব্যালট বিতর্ক। যার জন্ম দিয়েছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ফের একবার এই একই অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
ডাবল ব্যালট অভিযোগে এবার আদালতে যাওয়ার হুমকি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। এর আগে অধীরের মুখেই শোনা গিয়েছিল নকল ব্যালটের অভিযোগ। সেই মন্তব্যের সূত্র ধরেই ডাবল ব্যালট শব্দের আবির্ভাব ঘটিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর সেই ডাবল ব্যালটের শব্দকে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করলেন অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কংগ্রেসের ইস্তেহার প্রকাশ করতে গিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন- ব্যালট পেপার জোড়া ছাপা হচ্ছে। মানুষের ভোটকে পরবির্তন করে নকল ব্যালটের মধ্যে দিয়ে তাদের জয় নিশ্চিত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী দিনে বাংলার নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার জন্য তৃণমূলনেত্রীর নির্দেশে বাংলার পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় হয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারীও ফের একবার ডাবল ব্যালট অভিযোগে সরব হন এবং রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন। ভোটদান মিটলে তিনি রাতভর ব্যালট পাহারারও ডাক দেন। অন্যদিকে, সিপিএম-এর যুবনেতা সৃজন ভট্টাচার্যও ডাবল ব্যালটের বিতর্কে বাড়তি মাত্রা যোগ করেন। সংবাদমাধ্যমকে এই ডাবল ব্য়ালট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, হুগলিতে তিনি পঞ্চায়েতের প্রচারকাজ চলাকালীন খবর পান যে সেখানে ভোটকর্মীদের রাতে অফিসে থাকতে বলা হয়েছে। কারণ, যে ব্যালট ছাপানো হয়েছিল তাতে নাকি ভুল বেড়িয়েছে। তাই নতুন করে আবার ব্যালট ছাপানো হবে। সৃজনের দাবি, যদি ব্যালট ছাপানো সম্পন্ন হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে আবার ব্যালট পেপার ছাপানো হচ্ছে কেন। আগের ব্যালট পেপারে কি ভুল ছিল যে নতুন করে ব্যালট পেপার ছাপাতে হচ্ছে? এমন প্রশ্নও করেছেন সিপিএম নেতা সৃজন ভট্টাচার্য।
বহরমপুরে অধীর চৌধুরী ডাবল ব্যালট বিতর্কে একাধিক অভিযোগে আরও বলেন যে, ব্যালট জোড়া ছাপা হচ্ছে। সেই ব্যালট পেপার নির্বাচনের দিন বুথ থেকে স্ট্রং রুমে যাওয়ার পথে পরিবর্তিত হবে। অধীরের আরও অভিযোগ- ব্যালট ছাপান যে অফিসারেরা, যাঁদের কাছে কম্পিউটারের চাবি থাকে, সেই চাবি পুলিশ চাইছে। পুরুলিয়ার ৩ জন অফিসারকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকার সত্ত্বেও। কারণ ব্যালট ইউনিটের চাবি দিতে তাঁরা অস্বীকার করেছেন। আদালতের বারবার হস্তক্ষেপে বিচলিত তৃণমূল কংগ্রেস। তাই সন্ত্রাস এবং কারচুপির নতুন নতুন রাস্তা উদ্ভাবন করছে।
বিরোধীদের পাল্টা জবাবও দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পাল্টা জানিয়েছেন, নাচতে না জানলে উঠোন বেঁকা। তিনি আরও বলেন যে, ওদের সংগঠন, সমর্থন নেই বলে সংবাদমাধ্যমে চমক দিয়ে বেঁচে থাকতে চাইছেন। ওঁর মতো খুনের রাজনীতি আমরা করি না। যদি এতই প্রমাণ থাকে তাহলে বিরোধীরা কেন আদালত বা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন না সেই প্রশ্নও তুলেছেন ফিরহাদ হাকিম।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সূত্রেও বিরোধীদের ডাবল ব্যালট অভিযোগকে নসাৎ করা হয়েছে। বলা হয়েছে-- নকল ব্যালট হওয়ার কথা নয়। যে ব্যালট ব্যবহার হয়, তার ক্রমিক নম্বর থাকে এবং তা সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়।