প্রধানমন্ত্রী মোদী দ্বিতীয়বারের মতো কলকাতায় এলেন। ফোর্ট উইলিয়ামে ১৬তম যৌথ কমান্ডারদের সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রতিরক্ষা সংস্কার, অপারেশন সিন্দুর এবং ৭১,৮৫০ কোটি টাকার প্রকল্পগুলি এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। জেনে নিন সফরের সম্পূর্ণ বিবরণ…।
যৌথ কমান্ডারদের সম্মেলন ২০২৫: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো কলকাতায় এসেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় আসাম থেকে সরাসরি কলকাতায় পৌঁছানোর পর, সোমবার তিনি ফোর্ট উইলিয়ামে ১৬তম যৌথ কমান্ডারদের সম্মেলন-২০২৫ (Joint Commanders’ Conference) এর উদ্বোধন করবেন। এই উচ্চ-স্তরের সম্মেলন নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামরিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠছে যে, এই বৈঠকে কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, যা ভারতের প্রতিরক্ষা এবং উন্নয়ন কৌশলকে নতুন দিক দেখাবে।
কেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর কলকাতা সফর রহস্যময় বলে মনে করা হচ্ছে?
এই প্রশ্নটি বারবার আলোচনায় আসছে যে, প্রধানমন্ত্রী এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার কলকাতায় কেন এলেন? এর আগে ২২শে আগস্ট তিনি মেট্রো রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন এবং এখন সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সদর দপ্তর ফোর্ট উইলিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে ভাষণ দেবেন। এই দ্রুত সফরের পেছনে কি শুধুমাত্র উন্নয়ন প্রকল্পই রয়েছে, নাকি প্রতিরক্ষা নীতি সম্পর্কিত কৌশলগত প্রস্তুতিও লুকিয়ে আছে?
ফোর্ট উইলিয়াম সম্মেলন কি ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশল বদলে দেবে?
যৌথ কমান্ডারদের সম্মেলন একটি দ্বিবার্ষিক অনুষ্ঠান, যেখানে তিন বাহিনীর প্রধান, সিডিএস অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মতো শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। এই বছরের বিষয়বস্তু হলো-“সংস্কারের বছর-ভবিষ্যতের জন্য পরিবর্তন”। এই বিষয়বস্তু থেকে স্পষ্ট যে, ভারতের প্রতিরক্ষা কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তনের রূপরেখা তৈরি হতে পারে।
অপারেশন সিঁদুর কি আলোচনার মূল বিষয় হবে?
মে ২০২৫ সালে ভারত পাকিস্তান এবং পিওকে-তে জঙ্গি ঘাঁটিতে অপারেশন সিঁদুর চালিয়েছিল। তিন বাহিনীর যৌথ অভিযান জঙ্গিদের কড়া জবাব দিয়েছিল, কিন্তু একই সঙ্গে সক্ষমতা ব্যবধানের (Capability Gap) বাস্তবতাও সামনে এনে দিয়েছিল। এখন প্রশ্ন হলো, এই সম্মেলনে কি সেই ত্রুটিগুলি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে এবং সংস্কারের সুনির্দিষ্ট কৌশল তৈরি হবে?
প্রধানমন্ত্রী মোদীর উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা কর্মসূচি একসঙ্গে কেন?
এই সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা সম্মেলনেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না। তিনি প্রায় ৭১,৮৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাসও করবেন। এর সঙ্গে সঙ্গে মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে দিল্লীকে সংযুক্তকারী রাজধানী এক্সপ্রেস এবং গুয়াহাটি ও কলকাতার জন্য নতুন রেল পরিষেবাও চালু করবেন।
কড়া নিরাপত্তা কি কোনো বড় ঘোষণার ইঙ্গিত দেয়?
রাজভবন এবং ফোর্ট উইলিয়ামের আশেপাশে নিরাপত্তার অভূতপূর্ব ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসপিজি মোতায়েন, সিসিটিভি নজরদারি এবং যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে, সম্মেলনে কিছু বড় সিদ্ধান্ত আসতে পারে, যার প্রভাব দেশের সামরিক নীতিতে পড়বে।
কলকাতা কি প্রতিরক্ষা কৌশলের টার্নিং পয়েন্ট হবে?
প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর শুধুমাত্র একটি সাধারণ সফর বলে মনে হচ্ছে না। উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং সামরিক সংস্কার – তিনটি দিককে একসঙ্গে স্পর্শ করে এই সফর ভারতের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে। এখন দেখার বিষয় ফোর্ট উইলিয়াম থেকে কোন বড় বার্তা বেরিয়ে আসে।


