সংক্ষিপ্ত
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দলগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে। শনিবার দাবি করেছেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে মমতার। তবে কয়েকটি বিষয় তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একক দল হিসেবে লড়াইয়ে থাকবে - এটা মনে করা ভুল। শনিবার নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কয়েকটি আঞ্চলিক দল রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে। ৯০ বছরের অমর্ত্য সেন এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। তিনি বলেন মমতার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে মমতার গ্রহণযোগ্যতা এখনও যাঁচাই করা যায়নি।
এদিন অমর্ত্য সেন বলেন, 'আমি মনে করি বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যার মধ্যে ডিএমকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ এবং সমাজবাদী পার্টি শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।' তবে এগুলি আগামী দিনে কতটা শক্তিশালী হবে সেসম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন বলেও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি এটা এখনই খারিজ করে দেওয়া ভুল হবে যে বিজেপি জায়গা নিতে পারে এমন কোনও দল নেই কারণ বিজেপি একটি দল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু বর্তমানে বাকি অংশের তুলনায় হিন্দুদের দিকেই এই দল বেশি মনোযোগী।'
জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস বা এনসিপি ও জনতা দল ইউনাইটেড-সহ বেশ কয়েকটি দলের নেতারা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস -সহ নতুন একটি জোটের অহ্বান জানিয়েছে। তারা জোর দিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে। সেই সব দলের নেতাদের অনুমান তাতে বিজেপিকে পরাস্ত করা যাবে। অমর্ত্য সেন এদিন বলেন, 'বিজেপি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখযোগ্য়ভাবে হ্রাস করেছে। এটি কেবলমাত্র হিন্দু ভারত ও একটি হিন্দিভাষী ভারত হিসেবেই ভারতকে তুলে ধরতে চায়। এতে ভারতের শক্তি সংকুচিত হচ্ছে। আজ ভারতে বিজেপির বিকল্প না থাকাটা খুবই দুঃখজনক হবে।'
অমর্ত্য সেন আরও বলেন, যদি বিজেপিকে শক্তিশালী দেখায় তাহলে তার মধ্যে দুর্বলতাও রয়েছে। আর সেই কারণেই তিনি মনে করেন অন্য রাজনৈতিক দলগুলি যদি সত্যি চেষ্টা করা তারা বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারবে। তিনি বিরোধীদের বরখাস্ত করতে এখনই রাজি নন বলেও জানিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন কিনা- এই প্রশ্নের উত্তরে অমর্ত্য সেন বলেন,মমতার সেই ক্ষমতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'এটি এমন নয় যে তার এটি করার ক্ষমতা নেই। তার দক্ষতা রয়েছে। তবে এটা এখনও প্রমাণিত হয়নি যে মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের জনগণের হতাশা দূর করতে ও বিরোধী শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে।'মমতা বন্দ্য়োপাধ্যাায়ের তৃণমূল কংগ্রেস , কে চন্দ্রশেখর রাও-এর তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এএএম) নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক দলগুলি ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের দৌড়ে ফেডারেল ফ্রন্ট (এফএফ) গঠন করেছিল।
সেই বছরের জানুয়ারিতে, টিএমসি সুপ্রিমো আয়োজিত এক মহাসভায় কলকাতায় জড়ো হওয়া নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল।
উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন জেডি(এস) নেতা এবং কর্ণাটকের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া,অরবিন্দ কেজরিওয়াল (এএপি), প্রাক্তন ইউপি মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব (এসপি), তামিলনাড়ুর এমকে স্টালিন (ডিএমকে), মহারাষ্ট্রের শরদ পাওয়ার, জম্মু ও কাশ্মীরের ওমর আবদুল্লাহ এবং ফারুক আবদুল্লাহ এবং অরুণাচল প্রদেশের গেগং আপাং।
তবে অমর্ত্য সেন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জিততে কংগ্রেসের ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন কংগ্রেস দুর্বল হয়েছে। তিনি অবশ্য বলেছেন, যে একটি একমাত্র দল যা সর্বভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। 'কংগ্রেস অনেক দুর্বল হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। আমি জানি না কেউ কংগ্রেসের ওপর কতটা নির্ভর করতে পারে। অন্যদিকে কংগ্রেস অবশ্যই এখনও একটি সর্বভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে যা অন্য কোনও দল এখনও পর্যন্ত দখল করতে পারে না।' তবে কংগ্রেসের অন্দরে এখনও সমস্যা রয়েছে বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
আরও পড়ুনঃ
ত্রিপুরার রাজনৈতিক সমীকরণে বদল, বিজেপির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করবে কংগ্রেস-সিপিএম