সংক্ষিপ্ত
একের পর এক ইস্যুতে তথ্য জানার অধিকার আইনের বলে রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন বিশ্বনাথ গোস্বামী, কখনও তুলে ধরেছেন বিষমদকাণ্ডে ক্ষতিপূরণ ঘোষণায় সরকারের দ্বিচারিতা, কখনও দেখিয়েছেন ঋণের বোঝায় রাজ্যে কৃষক মৃত্যুর হার। এবার গুরুতর অভিযোগ আনলেন তিনি।
খোদ ক্যাগ অফিসেই শারীরিকভাবে নিগ্রহের অভিযোগ। আর এই অভিযোগ এনেছেন আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট বিশ্বনাথ গোস্বামী। তাঁর আরও অভিযোগ, এই নিগ্রহের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হেয়ার স্ট্রিট থানাতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু, সেখানেও অভিযোগ গ্রহণ করা নিয়ে বিপুল গড়িমসি করা হয়। নানা আছিলায় অভিযোগ নেওয়া হয়নি প্রথমে বলে অভিযোগ। বিশ্বনাথ গোস্বামী জানিয়েছেন, ক্যাগ অফিসে তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনের বলে কিছু তথ্য চাইতে গিয়েছিলেন, সেই সময় তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়।
বিশ্বনাথ গোস্বামী আরও জানিয়েছেন, ৩০ নভেম্বর ট্রেজারি বিল্ডিং-এ সিএজি অফিসের ভিতরে এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি ২ ডিসেম্বর স্থানীয় হেয়ারস্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি গোটা ঘটনার বিবরণ সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, 'CAG অফিসে আক্রমণ, লাঞ্ছিত, ও অপব্যাবহার।' তিনি বলেছেন কলকাতার ক্যাগ অফিসে যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে রাজ্যে পঞ্চায়েত, পুরসভা বা জেলা পরিষদের কী অবস্থা! বিশ্বনাথ গোস্বামী আরও জানিয়েছেন, তাঁর অভিযোগ নেওয়া হচ্ছিল না। গোটা বিষয়টি ম্যানেজ করার অদম্য চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি আরও জানিয়েছেন তথ্য জানার অধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা তাঁর কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বনাথ গোস্বামী বলেছেন, সিনিয়র অডিট অফিসার এনকে মাজি পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি আক্রমণ করার জন্য উস্কানি দিয়েছিলেন তাঁর সহকর্মীদের। বিশ্বনাথ গোস্বামীর অভিযোগ তাঁকে শুধু নিগ্রহই করা হয়নি, অকথ্য ভাষায় গালিগালজ-ও করা হয়। পুরো ঘটনায় ক্যাগ অফিসের ১০ থেকে ১২ জন কর্মী এনকে মাজির সঙ্গে তাঁকে আক্রমণ করেন বলেও অভিযোগ করেছেন বিশ্বনাথ গোস্বামী। তাঁর আরও অভিযোগ ক্যাগ অফিসের কর্মকর্তারা তাঁর ওপর বিরক্ত। কারণ তিনি বহু বছর ধরে তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমে নিরীক্ষা সংস্থার দুর্নীতি ও অসদাচরণের বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। আর এই নিয়ে নিজস্ব অন্তর্তদন্ত করে যাচ্ছেন। জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্য দ্য হিন্দু-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বনাথ গোস্বামীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল সতীশ কুমার গর্গ। দ্য হিন্দু জানিয়েছে, গর্গ নাকি বলেছেন, এমন কোনও ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই। তবে, এই নিয়ে পুলিশ কোনও তদন্ত করলে তিনিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিশ্বনাথ গোস্বামীর মতে ভারতে তথ্য জানার অধিকার কর্মীদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে কর্মী ও প্রশিক্ষণ বিভাগের গঠিত একটি টাস্ক ফোর্সের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে যেখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও কেন্দ্রীয় কথ্য কমিশন সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা বিষয়টি বিবেচনা করে। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থা আর ক্যাগের সদর দফতরেও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন ২০১৮ সাল থেকেই তিনি অসংখ্যবার জনসাধারণের সমস্যা নিয়ে ক্যাগ অফিসের আরটিআই দায়ের করেছেন। কিন্তু কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেছেন, ক্যাগ অফিসে তথ্য চাওয়ার জন্য যে আক্রমণের মুখে তাদের পড়তে হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না।
আরও পড়ুনঃ
রাস্তায় বসে বিক্ষোভ বিজেপির, সুকান্ত মজুমদারের ওপর জয়নগরে হামলার প্রতিবাদ শিলিগুড়িতে