Abhishek Banerjee on Jobless Teachers: একটানা তেরো দিন ধরে চলছে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারাদের আন্দোলন। কী বললেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়? বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন…
Abhishek Banerjee on Jobless Teachers: নিয়োগ দুর্নীতিতে সুপ্রিম রায়ে চাকরি গিয়েছে বাংলার প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। হকের চাকরি ফিরে পেতে গত বৃহস্পতিবার থেকে বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ সদস্যেরা। সেইমতো বিকাশ ভবনের সামনে জড়ো হন শয়ে শয়ে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। ক্রমেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন শিক্ষকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে চাকরিহারারা শিক্ষকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশ আধিকারিকরা।
টানা তেরো দিন ধরে সল্টলেকের বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন 'যোগ্য' চাকরিহারারা। তাঁদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। যদিও আন্দোলনকারীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এরই মধ্যে আন্দোলনকারীদের প্রতি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা দিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
এদিন তিনি বলেন, ''আন্দোলন সবার অধিকার। আমি আন্দোলনকে ছোট করতে চাই না, তবে সেটা যেন অহিংস হয়। আমি চাই না আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়া হোক।'' সোমবার দদমদম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি আরও বলেন, ''আমি কয়েকটি ভিডিয়ো দেখেছি যেখানে দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনকারীরা গেট ভাঙার চেষ্টা করছেন। মহাত্মা গান্ধী অহিংসার কথা বলেছেন। আমিও যখন ১০০ দিনের কাজের টাকা আদায়ের জন্য দিল্লি গিয়েছিলাম, রাজভবনের সামনে অবস্থান করেছিলাম। কিন্তু হিংসার পথে যাইনি। হিংসা হলে আন্দোলনের আসল সারমর্ম নষ্ট হয়ে যায়।''
তৃণমূল সাংসদ একা নয়, সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার পথে একই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee News)। চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ''প্রত্যোকটা আন্দোলনের একটা নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে। কোর্টের কিছু বাধ্য বাধকতা থাকে। আমরা কখনই বলতে পারি না যে, কোর্টের রায় মানব না। আমার যথেষ্ট সিমপ্যাথি ছিল। থাকবে। আমি বলেছিলাম রিভিউ করব।''
মমতা আরও বলেন, ''আমরা যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতি সব সময় মানবিক। এখনও পর্যন্ত কারও বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়নি।'' তিনি আরও জানান, গ্রুপ-সি, ডি কর্মীদেরও স্কীমের মাধ্যমে মাইনে দেওয়া হচ্ছে। সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার আগে দমদম বিমান বন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি আরও বলেন, ''চাকরিহারাদের আন্দোলনে যারা উস্কানি দিচ্ছেন, তাঁরাই তো কোর্টে গিয়ে মামলা করেছিলেন। নাটের গুরুরা যদি স্বার্থরক্ষার গুরু হয়ে যায় তাহলে মুশকিল।''
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। আদালতের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা। আপাতত শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, এবং তাঁরা বেতনও পাবেন। কিন্তু অশিক্ষক কর্মীরা পুরোপুরি চাকরিহীন অবস্থায় রয়েছেন। SSC-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিয়োগের জন্য নতুন পরীক্ষা নিতে হবে। কিন্তু 'যোগ্য' চাকরিহারা চাকরি হারিয়ে আবারও পরীক্ষা দিতে রাজি নন। তাই তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন বিকাশ ভবনের সামনে।
শুধু তাই নয়, গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা চরমে ওঠে। সরকারি দফতরে কর্মরত অনেক কর্মী, যাঁদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও অসুস্থ ব্যক্তিও ছিলেন, বিকাশ ভবনে আটকে পড়েন। আন্দোলনকারীরা তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। যা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দেন, আন্দোলনকারীদের লক্ষ্মণরেখা।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


