West Bengal Legislative Assembly: বিধানসভায় মুখ্য়মন্ত্রীর ভাষণ শুরু হতেই তুমুল উত্তেজনা বিজেপি বিধায়কদের। কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বিশদে জানতে  সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন… 

কলকাতা: সপ্তাহের শুরুতেই শাসক-বিরোধী তরজায় তপ্ত বঙ্গ বিধানসভা। সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালীন বিজেপির হট্টগোলের জেরে তুমুল শোরগোল। অধিবেশন থেকে বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাওকে সাসপেন্ড অধ্যক্ষের। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা তুলে প্রশ্ন করেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের কথায় কানই দিলেন না অধ্যক্ষ। একের পর এক বিরোধীদের সাসপেন্ড করেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, রাজ্যের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে সামনে রেখে প্রশ্ন করায় তীব্র বিরোধিতা। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা তুলে বিজেপি প্রশ্ন করায় চরম আপত্তি জানানো হয়। বিধানসভার ভিতরে শান্তির শৃঙ্খলা নষ্ট করা হচ্ছে এরকমই অভিযোগ আসতে থাকে। প্রতিবাদে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করে বিজেপি। বিধানসভার সিঁড়িতে তুলসী গাছ নিয়ে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সহ অন্যান্য বিধায়করা। আর তারপরই চরমে পৌঁছয় উত্তেজনা।

রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার হাল ফেরাতে একটি মুলতবি প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী দল বিজেপি। তারপরেই সেই বিষয়ে বলতে নারাজ অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকাকালীন ঘটে এই ঘটনা। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণ বিচারাধীন তাই সেটাকে নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরে অধিবেশন কক্ষের ভিতর পরিষদীয় দল বিজেপি বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এরপরই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মনোজ ওঁরাওকে সাসপেন্ড করেন। বিধানসভার মার্শালকে দিয়ে মনোজ ওঁরাওকে বের করে দেওয়া হয়।

এদিকে অধিবেশনে তখন উপস্থিত ছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই বিজেপির বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণ পরই বিজেপি পরিষদীয় দল বিধানসভা অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করে বাইরে বেরিয়ে আসে। তারপরেই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শংকর ঘোষকেও সাসপেন্ড করেন। 

এর আগেও অধ্যক্ষ বলেছিলেন, ‘’বিধানসভা বাজার হয়ে গিয়েছে, অনেক অনেক বিরোধীদল তিনি দেখেছেন, কিন্তু এমন এই প্রথম।'' সোমবারও তারই আরেক উদাহরণ যেন সামনে এলো এই ঘটনার পর। এখনও পর্যন্ত সেই ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত বিধানসভা, মুহুর্মুহু উঠছে স্লোগান বিজেপি বিধায়কদের।

অন্যদিকে, বিধানসভায় বিজেপির হট্টগোল নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ''বিরোধী দলের প্রশ্ন করার মতো কিছু নেই, তাই অশ্লীল স্লোগান দেয়।'' অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি বিধায়কদের স্লোগান নিয়ে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘’একটা হওয়াই চটির দোকান খুলুন। হাফ মিনিস্টার। যা রোজগার হবে ইনকাম ট্যাক্স এ দেখিয়ে দেবেন।'' নাম না করে সুকান্ত মজুমদারকে কটাক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। 

উল্লেখ্য, গত ১২ জুন একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীর দিকে ‘হাওয়াই চটি’ ছোড়েন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ঘটনাচক্রে সেটি গিয়ে পড়ে শিখ সম্প্রদায়ের এক পুলিশ কর্মীর পাগড়িতে! এমনটাই অভিযোগ এনেছে কলকাতার শ্রীগুরু সিং সভা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের গুরুদ্বারের প্রতিনিধিরা এবং শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন ক্ষোভ উগরে দেন সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গে বিধানসভায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।

সোমবার তিনি আরও বলেন, ‘’আমি কোন শাড়ি, কোন জুতো পরব সেটাও ঠিক করে দেবেন? আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আপনারা জিরো হয়ে যাবেন।'' ঠিক এ ভাষাতেই নাম না করে কার্যত বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।