সংক্ষিপ্ত

মদন মিত্রের ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। যা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে জোরালো বিতর্ক। শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ময়দানে নেমে পড়েছে পদ্ম শিবির।

কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের স্বপক্ষে জোরদার গলা তুললেন প্রাক্তন ফুটবলার এবং তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সাংসদ প্রসূন বলেছেন, ‘মদন মিত্র মন্ত্রিসভায় নেই দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি। তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় সেরা ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। আর কাউকে ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে আমি মানি না। কেউ রাগ করলে আমার কিছু যায় আসে না। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি মন্ত্রিসভায় মদন মিত্রের নাম নেই!’‌

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় কামারহাটির হেভিওয়েট বিধায়কের স্থান না হওয়ায় তিনি ‘অবাক’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাওড়া সদরের সাংসদ। মদন ছাড়া আর কাউকে তিনি রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে মানেনই না, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কোনও রাখঢাক না রেখেই। শনিবার বালির পাঠকপাড়ায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রসূন। একই দিনে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মদন মিত্রও। সেখানে প্রসূন বলেন, ‘‘যদি পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের কেউ ক্রীড়ামন্ত্রী হয়ে থাকেন, তিনি মদন মিত্র। আর কাউকে আমি ক্রীড়ামন্ত্রী মানি না। আমি ভীষণ গর্বিত হই এই ভদ্রলোককে দেখলে। আমি ভালোবাসি। উনি আমাদের প্রিয় মানুষ।’’ 

প্রকাশ্য জনসভায় মদন মিত্রের অকুণ্ঠ প্রশংসা করে প্রসূন বলেন, ‘‘মদন মিত্র এমন এক জন মানুষ যিনি তৃণমূল থেকে শুরু করে দেশের ইতিহাসে রয়েছেন। উনি একেবারে প্রথম দিনের লোক। দিদির পাশে তো এক-দু’জন ঘুরতেন। এখন অনেকে ঘুরছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি। কিন্তু মদন মিত্রকে সম্মান দিতে হবে।’’

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়া দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন অরূপ বিশ্বাস, প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে শিবপুর কেন্দ্রের বিধায়ক মনোজ তিওয়ারিকে। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রীর বেছে নেওয়া ক্রীড়ামন্ত্রীকে নিয়ে শুধুমাত্র আপত্তিই নয়, মদন মিত্রকে মন্ত্রিসভায় কোনও জায়গা না দেওয়া সম্পর্কেও বেশ ক্ষুব্ধ প্রসূন। মদনের পরবর্তী ক্রীড়ামন্ত্রীদের সম্পর্কে নিজের ক্ষোভের কারণও প্রকাশ করেছেন তিনি। বলেছেন, “আমরা খেলার টিকিট পাই না। গৌতম সরকার, সুব্রত ভট্টাচার্য খেলার টিকিট পায় না। মদন মিত্র বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিত প্যাকেট করে। রাত দেড়টা পর্যন্তও আমার সঙ্গে কথা বলেছে।”

এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘এটা কারও ব্যক্তিগত বক্তব্য। মন্ত্রিসভা কী ভাবে সাজাবেন, কী ভাবে মন্ত্রিসভা গতিশীল হবে সেটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়। আমার মনে হয়, এই ধরনের বক্তব্য প্রকাশ্যে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক তৃণমূল নেতা মনে করেন, আগামী ভোটে টিকিট পাওয়া নিশ্চিত নয় বুঝেই নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে চাইছেন প্রসূন।

তবে, শাসকদলের অন্দরে অস্বস্তি টের পেয়ে এবার কোমর বেঁধে লেগে পড়েছে পদ্মশিবির। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য কটাক্ষের সুরে বলেছেন, “প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য মদনের প্রতি আনুগত্য কিংবা ভালোবাসার প্রকাশ নয়। এই মন্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, তৃণমূলের শেষের সময় এসে গিয়েছে।”

আরও পড়ুন-
শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে ঘূর্ণাবর্ত, মঙ্গলবার থেকে কোন কোন জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস?
একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াকে ৪ জন মিলে গণধর্ষণ, অপমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা বীরভূমের কিশোরীর
শরীরের অর্ধেক ভিতরে, বাকিটা বাইরে! লিফটে চলতে শুরু করায় বীভৎস মৃত্যু মুম্বইয়ের শিক্ষিকা জেনিলা ফার্নান্ডেজের