সংক্ষিপ্ত

কালীঘাটে কোর কমিটির বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বৈঠকে হাজির ছিলেন মন্ত্রী-সহ জেলার নেতারা

ইভিএম কারচুপির তত্ত্বে অনড় মমতা

লোকসভা ভোটের বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। কোর কমিটির বৈঠকে এভাবেই দলের নেতাদের উদ্বুদ্ধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে যেমন নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তোলার নির্দেশ নেতাদের দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী, একই সঙ্গে ফের ভোটে খারাপ ফলের জন্য ইভিএমে কারচুপিকেই দুষেছেন তিনি। 

এ দিন দলের কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর্যালোচনা করার পাশাপাশি কীভাবে এই ধাক্কা সামলে ওঠা যায়, তা ঠিক করাই ছিল বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনেই ছিল বৈঠক। 

বৈঠকে মমতা সবথেকে বেশি উষ্মা প্রকাশ করেন উত্তরবঙ্গের খারাপ ফল নিয়ে। উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে জানতে চান, সবরকম সাহায্য করা সত্ত্বেও কেন এত খারাপ ফল হল। যদিও নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, "সাময়িক বিপর্যয়, ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। এই ফল নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।"

ভোটের পরে দলেরই একাংশের অভিযোগ, অধিকাংশ নেতা অহং এবং দুর্নীতিই এমন ফলের জন্য দায়ী। এ দিন দলের নেতাদের মমতা এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থেকে নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তোলার নির্দেশ দেন। পার্টি অফিসও নিয়মিত খোলার নির্দেশ দেন নেত্রী। 

নেতাদের সতর্ক করার সঙ্গেই ফের একবার ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তোলেন মমতা। ইভিএম কারচুপির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের উপরেও টানা  চাপ সৃষ্টি করে রাখতে হবে বলে জানান মমতা। 
দলীয় নেতাদেরই তিনি প্রশ্ন করেন, "ইভিএম কারচুপি না হলে কী করে আগে থেকে মোদী বললেন যে বিজেপি তিনশো আসন পাবে?"

এর পাশাপাশি ভোটার তালিকা সংশোধনের উপরে জোর দিয়েছেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, এবার বহু তৃণমূল কর্মীর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। বিজেপি-র উত্থান নিয়ে দলীয় নেতাদের সতর্ক করে মমতা বলেন, অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা বিজেপিতে যাচ্ছেন। সেরকম কাউকে এলাকায় দেখা গেলে নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এর পাশাপাশি দলীয় সংগঠনেও বেশ কিছু বদল করেছেন মমতা। নদিয়া জেলার পর্যবেক্ষক করা হয়েছে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে, মালদহের পর্যবেক্ষক হলেন সাধন পাণ্ডে এবং গোলাম রব্বানি। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্রের মতো তরুণ প্রজন্মের নেতানেত্রীদের দলের মুখপাত্র করেছেন মমতা। এছাড়াও জয় হিন্দ বাহিনীর চেয়ারম্যান করা হয়েছে ব্রাত্য বসুকে, ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন ইন্দ্রনীল সেনকে। মহিলাদের নিয়ে বঙ্গ জননী বলে নতুন বাহিনী গড়ে দিয়েছেন মমতা। যার মাথায় থাকছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। 

৭ জুন থেকে তৃণমূলের জেলাভিত্তিক কর্মী সম্মেলন হবে কলকাতায়। সম্ভবত কলকাতায় তৃণমূল ভবনে হবে এই কর্মী সম্মেলনে। তৃণমূল ভবনে যাতে প্রতিদিনই কোনও না কোনও বড়  নেতা বসেন, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন মমতা। যাতে বিভিন্ন জেলা থেকে অভাব, অভিযোগ নিয়ে এলে নেতাদের সামনে পান কর্মীরা।