তিনদিনে ভাঙল সোনার সম্পর্কদল ছাড়তে চাইছেন মণিরুলদলই বা কতটা চাইছে তাঁকে, জানালেন মুকুল রায়
এত তাড়াতাড়ি সাধের সংসার ভেঙে যাবে এ অতি দুর্জনেও ভাবেনি। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে হল তাই। গত ২৯মে বীরভূমের লাভপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা মণিরুল ইসলাম যোগদান করেন বিজেপিতে। এবার খবর, বিজেপি ছাড়তে চাইছেন তিনি। চাউর হওয়া খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখ মুকুল রায়। কিন্তু কেন তিন দিন গেল না সোনার বাসর? দুটো মতামত ঘুরছে বাজারে।
প্রথম মত, মণিরুলের মতো প্রার্থীকে ঘিরে বিপুল অশান্তি শুরু হয় বিজেপির অন্দরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন প্রার্থী বাছাইয়ের বিরোধিতা করেন হাওড়া কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত। অন্য দিকে আপত্তি ওঠে বীরভূম জেলা বিজেপির তরফেও।চাপের মুখে নিজেই ইস্তফার সিদ্ধান্ত নেন মনিরুল ইসলাম।
আরেকটি মত, মণিরুলের মতো প্রার্থীদের নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আরএসএস এর মত নেয়নি দল। সে ক্ষেত্রে আরএসএসের তরফেও কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে এই ধরনের বেনোজল ঢোকা রোধ করতে। এর পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মনিরুল ইসলাম।
২০১০ সালে অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরেই তৃনমুলে আসেন মণিরুল। ২০১১ সালে মণিরুল ইসলাম লাভপুর কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হন। বিপুল ভোটে জয়ীও হন মণিরুল ইসলাম। দিনে দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত মণিরুল লাভপুর এলাকায় একাধিপত্য বিস্তার করে। হয়ে ওঠেন গডফাদার।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে অতিরিক্ত দায়িত্বও দিয়েছিলেন। বীরভূমে পাথরচাপুরী ডেভলপমেন্ট অথারিটির এক বিশেষ পদও পান মণিরুল ইসলাম। এলাকায় সামগ্রিক উন্নয়নেও হাত লাগান মণিরুল, তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে একটু একটু করে কমতে থাকে ক্ষমতা। এলাকার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে লাভপুর বিধানসভার দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলার তৃণমূল নেতা অভিজিৎ সিন্হাকে। এখান থেকেই অনুব্রতর সঙ্গে তাঁর দূরত্বের শুরয়াত।
এই দূরত্বকেই হাতিয়ার করে তৃতীয় বার লাফ দিয়েছিলেন মণিরুল। তাঁর আশা ছিল বদলে যাওয়া হাওয়ায় পদ্মফুলের হাত আসবে ২০২১ এর বিধানসভার টিকিট। অনেকেরই বক্তব্য অনেকদিন ধরেই তলে তলে কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু মধুমাস এত ক্ষণস্থায়ী কে তা জানত!
