সংক্ষিপ্ত
করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই সংক্রমণ ঠেকাতে গত ৩ জানুয়ারি থেকে ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হয়। নবান্নের নির্দেশের পরেই পর্যটনের ভরা মরশুমে মুর্শিদাবাদের দর্শনীয় স্থানগুলির গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে (Valentine Day) দেশি-বিদেশি পর্যটকের (domestic and foreign tourists) সমাগমে জমে উঠলো মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। আর তাতেই রীতিমতো খুশির আমেজ তৈরি পর্যটন ব্যবসায়ীদের (Businessman) মধ্যে। যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল মুর্শিদাবাদের দর্শনীয় স্থানগুলি। তবে এদিন মুর্শিদাবাদ শহরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দর্শনীয় স্থান হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম সহ মতিঝিল, কাটরা মসজিদ, কাঠগোলার দর্শনীয় স্থানগুলি খুলে যাওয়ায় প্রেম দিবসে উপচে পড়ল মানুষের জমায়েত। এতে মুর্শিদাবাদের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মহলে স্বস্তির হাওয়া দেখা দিয়েছে।
এদিন দুপুর থেকেই হোটেল, রেস্টুরেন্ট, হস্তশিল্প ব্যবসায়ীরা তাদের সকল প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য তোড়জোড় শুরু করেন। সকাল থেকেই একটু একটু করে চেনা ছবি বদলাতে শুরু করে মুর্শিদাবাদে। এদিন বাস ও ছোট গাড়ির পাশাপাশি ট্রেনে চেপে সুদূর বাংলাদেশ, নেপাল থেকেও বিদেশি পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। তবে হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম ও মতিঝিলে পর্যটকদের ভিড় অপেক্ষাকৃত বেশি ছিল।
এদিনের জন সমাগম দেখেই বোঝা যায়, কয়েকদিনের মধ্যে মুর্শিদাবাদ পূর্বের চেহারা নেবে শীঘ্রই। দর্শনীয় স্থানগুলিতে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়তে শুরু করে। করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই সংক্রমণ ঠেকাতে গত ৩ জানুয়ারি থেকে ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হয়। নবান্নের নির্দেশের পরেই পর্যটনের ভরা মরশুমে মুর্শিদাবাদের দর্শনীয় স্থানগুলির গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ভরা মরশুমে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন পেশার মানুষের মাথায় হাত পড়ে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। কর্মহীন হয়ে পড়েন গাইড, টাঙ্গা-টোটো চালক সহ বিভিন্ন পেশার হাজার হাজার মানুষ।
আবার আর্থিক দুর্ভোগের আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে দিন গুজরান করতে থাকেন তাঁরা। পর্যটনের ভরা মরশুমে মুর্শিদাবাদে নিস্তব্ধতা বিরাজ করতে শুরু করে। এদিন হোটেল ব্যবসায়ী সাধন সরকার, রেজাউল করিম বলেন, চলতি মরশুমে প্রথম থেকেই পর্যটকদের ঢল নামতে শুরু করেছিল। গোটা জানুয়ারি মাসে হোটেলের সমস্ত ঘর বুকিং ছিল। কিন্তু নতুন করে করোনার সংক্রমণ সব হিসেব নিকেশ পাল্টে দেয়। ভ্যালেন্টাইনস ডে তে হঠাৎই মরা গাঙ্গে জোয়ার ফিরতে শুরু করেছে, পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
মুর্শিদাবাদ টাঙ্গা ইউনিয়নের সম্পাদক মনু শেখ বলেন, এই শহরে প্রায় ২৫০ টাঙ্গাচালক রয়েছেন। পর্যটকদের উপর তাঁদের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে। বিশেষ করে শীতের মরশুমে প্রায় কয়েক মাস মাত্র রুজিরুটির সংস্থান হয়। এতদিন বন্ধ থাকায় টাঙ্গা চালকরা চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েছিলেন। ফের তা খুলে যাওয়ায় কিছুটা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে"।
মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ আর্থিক অনটনে দিন কাটাচ্ছিলেন। এবার জমে উঠবে ব্যবসা"।