সংক্ষিপ্ত
- কাঁকসার জঙ্গলে অভিনব অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর- এর ব্যবস্থা
- জঙ্গল ঘেরা পথে দশ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার ব্যবস্থা
- পথেই দেখা মিলতে পারে হাতি- সহ বিভিন্ন প্রাণীর
- বন্ড সই করলেই তবে অনুমতি
উত্তরবঙ্গের স্বাদে পর্যটক টানতে এবার পশ্চিম বর্ধমানেও জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরের ব্যবস্থা করল বন দফতর। গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে দশ কিলোমিটার পথে হেঁটে যেতে যেতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পশুপাখি ও ঐতিহাসিক মন্দির দেখার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। দুর্গাপুরের কাছে কাঁকসার জঙ্গলে এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। পুর্ব বর্ধমানের আঞ্চলিক বন বিভাগ এই ব্যবস্থা চালু করেছে।
বন দফতর সূত্রে খবর, কাঁকসার জঙ্গলমহলে শিবপুর, মলানদীঘি, বনকাঠি অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জঙ্গল রয়েছে। শাল, মহুয়া, আম, জাম, শিমূল, সেগুন সহ নানান প্রজাতির গাছ গাছড়ার সমাহার সেখানে। দূষনমুক্ত ঘন জঙ্গল যেমন তেমনই রয়েছে জঙ্গলে হরিণ উদ্যান, ময়ুর সহ নানান পশু পক্ষির আবাস স্থল। আবার মাঝে মধ্যে গজরাজেরও আগমন হয় এই জঙ্গলে। দূষণমুক্ত ঘন জঙ্গল পেরিয়ে যাওয়ার পথেই পড়বে হরিণ উদ্যান, দেখা যাবে ময়ূর- সহ বিভিন্ন ধরনের পশপাখি। জঙ্গলের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী শ্যামারূপার মন্দিরের কাছে তৈরী হয়ে গিয়েছে ২০ ফুটের ওয়াচ টাওয়ার। দেউলের মৃগউদ্যানের পাশে বিশ্রামাগারের তৈরির কাজও প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার মুখে। শিবপুর -দেউল পর্যন্ত রয়েছে ট্রেকিং রুট। গভীর জঙ্গলের মধ্যে আলো আঁধারিতে ঘেরা লাল মোরামের রাস্তা চলে গিয়েছে। তার মাঝে জঙ্গলের মধ্যে চোখে পড়বে বেশ কিছু মনোরম দৃশ্য। যা পর্যটকদের হাতছানি দেয়। বেশ কয়েকটি জলাশয়ও এখানে রয়েছে। যেখানে শীতকালে ভিড় জমায় পরিযায়ী পাখিরা। যা এই ট্রেকিং-এর বাড়তি আকর্ষণ।
পর্যটকদের আকর্ষণ করার অনেক উপাদানই রয়েছে এই ট্রেকিং রুটে। বল্লাল সেন প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন শ্যামরূপার মন্দির ছাড়াও অজয় নদীর তীরে দেউল পার্কের মধ্যে আরও একটি শিব মন্দির রয়েছে। পার্কের ভিতরে জলাশয়ে রয়েছে বোটিংয়ের ব্যবস্থা, রয়েছে টয়ট্রেনও। এর পাশেই ডিয়ার পার্ক- এ রয়েছে ৭৫টি চিতল হরিণ। রয়েছে টিয়া, বন বিড়াল, বন মোরগের মুক্তাঞ্চল। আর জঙ্গল ঘেরা পথে মাঝেমধ্যেই হাতির দেখা মিলতেই পারে।
আরও পড়ুন- ট্রি হাউসে রাত্রিবাস, এবার শীতের ছুটির ঠিকানা হোক বাঁকুড়া
ট্রেকিংয়ে আসা পর্যটকদের জন্য় চোদ্দ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি বিশ্রামাগারে থাকছে ক্যান্টিন, আর্ট গ্যালারি, বনজ দ্রব্যের বিক্রয় কেন্দ্র। বন সংরক্ষণ কমিটির (গ্রামবাসীর) সদস্যদের তৈরি নানান হস্তশিল্পের সম্ভার থাকবে।
দুর্গাপুর ডিভিশনের বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার প্রণব কুমার দাস বলেন, ট্রেকিং- এর সময় সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিধারিত করা হয়েছে। বর্ষার সময় ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টম্বর পর্যন্ত তিন মাস ট্রেকিং বন্ধ থাকবে। প্রবেশ মূল্য হিসেবে ১০০ টাকা ও গাইড- এর খরচ বাবদ ৫০ টাকা করে প্রতিটি পর্যটকের কাছ থেকে নেওয়া হবে। অন লাইন অথবা সরাসরি যোগাযোগ করে বুকিং করতে পারবেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। তবে জঙ্গল পথে নানা রকম ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে ট্রেকিং করার আগে প্রকৃতিপ্রেমীদের বন্ডে সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।