সংক্ষিপ্ত

  • গড়িয়ায় বিয়ের আয়োজনে নব দম্পতির চমক
  • বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজনে সত্যজিৎ রায়ের বিভিন্ন চরিত্রের ব্যবহার
  • 'জয় বাবা ফেলুনাথ' ছবির সংলাপ ব্যবহার করে বিয়ের ডিজিটাল নিমন্ত্রণ কার্ড

বরাবরই সত্যজিৎ রায়ের ভক্ত। ইচ্ছে ছিল  নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে। আর নিজের প্রিয় পরিচালককে সম্মানিত করার জন্য নিজের বিয়ের থেকে ভাল অনুষ্ঠান আর কী হতে পারে।! পাত্রের এই ইচ্ছেয় সম্মতি দিয়েছিলেন পাত্রীও। দু' জনের এই ভাবনার ফসলেই অন্যরকম বিয়ের আয়োজনের সাক্ষী থাকলেন নিমন্ত্রিতরা। বিয়ের আয়োজন জুড়ে আগাগোড়াই থাকল কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের নানা অমর সৃষ্টি। 
 
দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুরের বাসিন্দা শৌভিক ঘোষ ও রাজশ্রী ভট্টাচার্য। দু' জনেই খুব ভাল বন্ধু ছিলেন। আর সেই বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। অবশেষে ফেব্রুয়ারিতে চার হাত এক হলো। বুধবার ১৯শে ফেব্রুয়ারি ছিল সৌভিক ও রাজশ্রীর বিয়ের রিসেপশন। সেই রিসেপশন- এর নিমন্ত্র কীভাবে করা হবে, অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে নিমন্ত্রণপত্র সবার কাছে পৌঁছনো যায়, তা ভাবতে গিয়েই অভিনব পরিকল্পনা করে ফেলেন নব দম্পতি। একটি ভিডিও ক্লিপ-এর মাধ্যমে ডিজিটাল নিমন্ত্রণ পত্র তৈরি করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দু' জনে। সত্যজিৎ রায়ের 'জয় বাবা ফেলুনাথ' ছবির একটি অংশ ব্যবহার করে এই নিমন্ত্রণ পত্র তৈরি  করা হয়েছিল। সেখানে ছবির ভিলেন মগনলাল মেঘরাজের সঙ্গে ফেলুদার সংলাপে অদলবদল ঘটিয়ে বিয়ের নিমন্ত্রণ সারা  হয়েছে। অভিনব এই নিমন্ত্রণ নিয়ে আমন্ত্রিতরা বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। 

শুধুমাত্র ডিজিটাল নিমন্ত্রণ নয়, রিসেপশন- এর অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা মিলল ভূতের রাজা থেকে শুরু করে অপুর সংসারের নানা চরিত্রের। কিন্তু এত কিছু থাকতে সত্যজিৎ রায় কেন? বর্তমানে মুম্বইয়ে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত হলেও ছোট থেকেই সত্যজিৎ রায়ের বড় ভক্ত শৌভিক। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশোনা করার সময় থেকেই সত্যজিৎ রায়ের লেখা এবং ছবির প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয় শৌভিকের। সত্যজিৎ রায়ের সমস্ত লেখা, ছবি থেকে শুরু করে, সেই ছবি গুলির চরিত্র, শ্যুটিং লোকেশন, অন্যান্য কাজ সম্পর্কে সব তথ্যই শৌভিকের নখদর্পণে। আর যাঁর প্রতি এত ভালোবাসা, নিজের জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিনে তাঁকে উপেক্ষা করা যায় কি? সেই কারণেই নিজের বিয়ের অনুষ্ঠান সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি ছাড়া ভাবতে পারেননি বলে দাবি করেছেন শৌভিক। জীবনসঙ্গীর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। 
 

সৌভিক ও রাজশ্রী দুজনে মিলে প্ল্যান করেই এই ডিজিটাল নিমন্ত্রিণ কার্ড করেছেন। বিয়েতে ছাপা কার্ডে হলুদ, সিঁদুরের ফোঁটা দেওয়ার রেওয়াজ সব বাঙালি পরিবারেই আছে। কিন্তু এই অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে নিমন্ত্রণ করতে গিয়ে পরিবারের কোনও বাধা আসেনি বলেই জানান শৌভিক। উল্টে এই নতুন পদ্ধতিকে সকলেই খুব সাদরে গ্রহণ করেছেন বলে দাবি তাঁদের।