সংক্ষিপ্ত

  • মালদহে করোনার থাবা অব্যাহত
  • বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা 
  • এবার সেই তালিকায় ঢুকলেন এক নার্স 
  • এই প্রথম পরিযায়ী শ্রমিকদের বাইরে কেউ আক্রান্ত হলেন
     

এতদিন মালদহে যত করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলছিল তাতে সকলেই ছিল পরিযায়ী শ্রমিক। এবার সেই তালিকায় যোগ হল এক সাধারণ বাসিন্দার নাম। পেশায় নার্স এই মহিলা অবশ্য কোভিড হাসপাতালে ডিউটি করতে গিয়ে ভাইরাসের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। ২১ মে মালদহের নারায়ণপুরের কোভিড হাসপাতালে সাতদিনের ডিউটি শেষ করেছিলেন ওই নার্স। এরপর ওই নার্স-সহ আরও সাতজন নার্সকে মালদহ যুবআবাসে কোয়ারান্টাইন করে রাখা হয়েছিল। সাতদিনের কোয়ারান্টাইনের শেষদিনে সকলের সোয়াব নেওয়া হয়। সেই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে একজন নার্সের শরীরে করোনাভাইরাস মিলেছে। 

আরও পড়ুন- করোনা পরীক্ষার নমুনা ছিনিয়ে পালালো বানরের দল, আতঙ্ক যোগী-রাজ্যে, দেখুন ভিডিও

করোনার রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই নার্সকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও, তাঁর শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ নেই। বাকি ৬ জন নার্সকেও এক্কেবারে সেলফ-আইসোলেশনে যুব-আবাসে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর এই নার্সদের দলের মধ্যে একজন এবং করোনা আক্রান্ত নার্স একে অন্যের ঘরে কোয়ারান্টাইনে প্রচুর সময় কাটিয়েছিলেন। তাই করোনা আক্রান্ত নার্সের ওই সঙ্গিনীও ভাইরাসের সংক্রমণে আসতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, এক নার্সের শরীরে এবার করোনার সংক্রমণের খবরটি চাওড় হতেই বাকি নার্সদেরও মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ, নার্সদের অনেকেই অভিযোগ করছেন কোভিড হাসপাতালের ওয়ার্ডে টানা ডিউটি করে যেতে হচ্ছে তাঁদের। কোভিড আক্রান্তের সমস্তকিছু তাঁদের করে দিতে হচ্ছে। এতে সারসরি কোভিড আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসছেন নার্সরা। এমনকী চিকিৎসকদের যে কাজগুলো করা দরকার সেগুলোও নার্সদেরকে করে দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। অধিকাংশ চিকিৎসকই ওয়ার্ডের বাইরে থেকে ঘুরে চলে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

আরও পড়ুন- অসম গেলে ফিরবেন কি করে, আতঙ্কে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ পরিযায়ী শ্রমিকের

জানা গিয়েছে, যে নার্স কোভিড হাসপাতালে ডিউটি করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর বাড়ি গাজোলে। তিনি বোলপুর হাসপাতালে কর্মরত। লকডাউনের আগে তিনি মালদহ জেলার কমিউনিটি হেলথ অফিসার পদের জন্য নির্বাচিত হন। সেই দায়িত্ব নেওয়ার আগে একটি ট্রেনিং প্রোগ্রামে যোগ দিতে মালদহে এসেছিলেন ওই নার্স। কিন্তু লকডাউন শুরু হতেই মাঝপথে ট্রেনিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ট্রেনিং-এ যোগ দেওয়া বাকি নার্সরা মালদহ জেলার মধ্যে কর্মস্থলে চলে যান। কিন্তু, ওই নার্স বোলপুরে ফিরে যেতে পারেননি। শেষমেশ, চলতি মাসের মাঝামাঝি তিনি মালদহ সিএমওএইচ-এর অধিনে কাজে যোগ দেন। কাজে যোগ দেওয়ার পরই তাঁর প্রথম ডিউটি পড়েছিল কোভিড হাসপাতালে। 

আরও পড়ুন অর্থনীতি বাঁচাতে 'পাপ্পু'র দেখানো পথই নিতে পারে মোদী সরকার, হতে পারে বাড়তি নোট ছাপানোও

মালদহে এই নার্স ছাড়াও শুক্রবার আরও ১০ জন নতুন করে আক্রান্তের খবর মিলেছে। এদের মধ্যে তিন জন ইংরেজবাজার থানা এলাকার, দুই জন মানিচকের, একজন করে কালিয়াচক, চাঁচল, গাঁজোল, লালবাথানি, রতুয়া-র বাসিন্দা। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত মালদহে ১৩৫-জনের শরীরে করোনা ভাইরাস মিলেছে। এছাড়াও আরও ৪ জনের শরীরেও করোনা ভাইরাস মিলেছিল। কিন্তু, সোয়াব টেস্টের খবর আসার আগেই এরা বেপাত্তা হয়ে যায়। এদের মধ্যে একজন বিহারের শ্রমিকও ছিল। পরিস্থিতি যা তাতে মালদহ জেলা খুব শীঘ্রই করোনা আক্রান্তে দেড় শতকের গণ্ডী পার করে ফেলবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।