সংক্ষিপ্ত
- নিমতা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ত্রিকোণ প্রেম
- পুলিশি জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছে মূল অভিযুক্ত প্রিন্স সিং
- ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা ছিল সে
- শনিবার বজবজ থেকে প্রিন্সকে গ্রেফতার করে নিমতা থানার পুলিশ
প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে ঘনিষ্টতা মেনে নিতে পারছিল না। সল্টলেকে একটি ধাবায় বসে মাত্র দু'ঘন্টা মধ্যেই ছক কষে দেবাঞ্জন দাসকে গুলি করে খুন করেছে প্রিন্স সিং। বেলঘরিয়া থানায় রাতভর জেরায় ভেঙে পড়ল নিমতা হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নবমীর রাতে দেবাঞ্জনকে খুন করার একাদশী পর্যন্ত বন্ধু বিশাল মারুর দমদমের ফ্ল্যাটে লুকিয়ে ছিল প্রিন্স। পরে বজবজে মাসির বাড়ি চলে যায় সে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। শনিবার রাতে বজবজ থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিমতা থানার পুলিশ।
খুন নাকি নিছকই দুর্ঘটনা? নবমীর রাতে নিমতায় যুবকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বেশ কিছুদিন টানাপোড়েন চলে। প্রথমে দুর্ঘটনা বললেও, পরে মৃত দেবাঞ্জন দাসের মোবাইলের সূত্র ধরে ত্রিকোণের প্রেমের ইঙ্গিত পায় পুলিশ। বস্তুত, নবমীর দিন যে বান্ধবীর সঙ্গে নাইট ক্লাবে গিয়েছিলেন দেবাঞ্জন, তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে নিমতা থানায় খুনের অভিযোগও দায়ের করেন মৃতের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, দেবাঞ্জনকে লাগাতার ফোনে হুমকি দিচ্ছিল ওই যুবক। এরপরই মৃতের বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিক প্রিন্স সিংয়ের খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার দেবাঞ্জনের বান্ধবীকে দীর্ঘক্ষণ জেরাও করা হয়। শনিবার সকালে প্রিন্সের বন্ধু বিশাল মারুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর রাতে বজবজ থেকে ধরা পড়ে নিমতা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত প্রিন্স সিং-ও। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে বারবার জেরা বদল করছিল প্রিন্স। এমনকী, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে চুলে ছাঁটও বদলে ফেলেছিল সে, চশমার পরাও বন্ধ করে দিয়েছিল।
গ্রেফতার করার পর শনিবার প্রিন্সকে বেলঘরিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। রাতভর জেরা শেষপর্যন্ত ভেঙে পড়ে সে । দেবাঞ্জন দাসকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় নিমতা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় প্রিন্স সিং জানিয়েছে, নবমীর দিন বান্ধবীকে নিয়ে দেবাঞ্জন যে নাইটক্লাবে গিয়েছে, সেকথা তাকে জানায় বন্ধু বিশাল মারু। সল্টলেকে সেক্টর থ্রি-এর একটি ধাবায় বসে মাত্র দু'ঘণ্টায় দেবাঞ্জনকে খুনের ছকও কষে ফেলে প্রিন্স। নবমীর দিন গভীর রাতে গাড়িতে করে বান্ধবীকে যখন তাঁর বাড়িতে ছাড়তে যাচ্ছিলেন দেবাঞ্জন, তখন স্কুটারে চেপে পিছু নেয় ওই বান্ধবীরই প্রাক্তন প্রেমিক। বিরাটির সর্দারপাড়ায় বান্ধবী নেমে যাওয়ার পরই দেবাঞ্জনের গাড়ি আটকায় প্রিন্স। রাস্তাতেই দু'জনের বচসা হয়। শেষপর্যন্ত দেবাঞ্জনকে গুলি করে স্কুটারে চেপে চম্পট দেয় প্রিন্স। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে পেল প্রিন্স সিং? তদন্তকারীদের দাবি, বিরাটিতে এক বন্ধুর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করে প্রিন্স। জেরায় তেমনই জানিয়েছে সে।