সংক্ষিপ্ত
প্রিন্সের বাড়ি ইসলামপুরের ছৌসিয়া এলাকায়। তাঁরা তিন ভাই ও এক বোন। প্রিন্সই সবার থেকে বড়। ছোট থেকেই সব ভাইবোন পড়াশুনার জন্য এলাকায় সুপরিচিত।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় (UPSC Exam) ১২৫ র্যাঙ্ক (125 Rank) করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ইসলামপুর (Islampur) শহরের ছেলে মহম্মদ মনজর হুসেন আনজুম (প্রিন্স)। এই খবরে খুশি ইসলামপুরেরর বিভিন্ন স্তরের মানুষ। এর আগে এই এলাকার কেউ ইউপিএসসিতে এত ভালো র্যাঙ্ক করেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা (Locals)। আর এই ব়্যাঙ্কিংয়ের মধ্যে দিয়ে উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) তথা ইসলামপুরের নাম ভারতের দরবারে উজ্জ্বল করে তুলেছেন প্রিন্স (Prince)।
প্রিন্সের বাড়ি ইসলামপুরের ছৌসিয়া এলাকায়। তাঁরা তিন ভাই ও এক বোন। প্রিন্সই সবার থেকে বড়। ছোট থেকেই সব ভাইবোন পড়াশুনার জন্য এলাকায় সুপরিচিত। ইসলামপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন প্রিন্স। পরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন তিনি। কানপুর আইআইটি (IIT) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (Civil Engineering) স্নাতক হন। পরে মুম্বইয়ে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে (Private Company) কাজ শুরু করেছিলেন। যদিও তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে একজন আইএএস অফিসার (IAS Officer) হিসেবে দেখার। যদিও সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই ২০১২ সালে তাঁর বাবা মহম্মদ মসলেউদ্দিনের মৃত্যু (Death) হয়। এরপর বাবার স্বপ্ন পূরণে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন প্রিন্স। বাবার স্বপ্নকে নিজের স্বপ্ন বানিয়ে নিয়েই পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ২০১৮ সালে তিনি দিল্লিতে গিয়ে ইউপিএসসি-র জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। অবশেষে সাফল্য পেলেন তিনি। সর্বভারতীয় ইউপিএসসি পরীক্ষায় ১২৫ র্যাঙ্ক করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন- মৃতের নামেও তোলা হচ্ছে রেশন, তালিকা থেকে সেই নাম বাদ দিতে তৎপর রাজ্য
আরও পড়ুন- টানা বৃষ্টির জের, অজয় নদের উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ সেতু
পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন খেলতে এবং বই পড়তেও ভালোবাসেন প্রিন্স। ছোট দুই ভাই ইফতেকার হুসেন আনজুম ডাক্তারি ও জিসান আলি আলিগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন। আর তাঁদের একমাত্র বোন ইশিকা তাসনিম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। প্রিন্সের এই সাফল্যের খবরে খুশি তাঁর মা নিগার সুলতানা। রাজ্যের সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গোলাম রাব্বানীকেও এই খবর দেন তাঁর মা। প্রিন্সকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মন্ত্রীও। তিনি বলেন, "ইসলামপুরের নাম উজ্জ্বল করেছে প্রিন্স। ছোট থেকেই ও খুব ভালো ছাত্র। ওকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।"
বুধবার দিল্লি থেকে ইসলামপুর পৌঁছান প্রিন্স। হুডখোলা গাড়িতে চাপিয়ে, পুষ্পবৃষ্টি করে তাঁকে বরণ করে নিয়েছেন ইসলামপুরের বাসিন্দারা। এলাকার কৃতি সন্তানের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা দেখে আপ্লুত প্রিন্স। ছেলের সাফল্য দেখে নিগার সুলতানা বলেন, "ছোট থেকেই আমার ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট মেধাবী ছিল। বিভিন্ন সময়ে নানান স্কলারশিপ পেয়ে তারা পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। প্রিন্সও একাধিক স্কলারশিপ পেয়েছে। এছাড়াও আমার বোনজামাই গোলাম রব্বানী আমাদের খুবই সাহায্য করেছেন। আমি খুব খুশি।" আর নিজের সাফল্য সম্পর্কে প্রিন্স জানিয়েছেন, পরিশ্রম, একাগ্রতা ও লক্ষ্য ঠিক থাকলে সাফল্য আসবেই।