সংক্ষিপ্ত
- আজ "বাসি ভাতের পরব" পুরুলিয়ায়
- সরস্বতী পুজোর দিন রান্না করে পরের দিনখাওয়া
- বহু বছর ধরে চলে সাবেক মানভূমের এই নিয়ম
- আজ দেবী ষষ্টীকে পুজো করে খাওয়া হবে খাবার
বুদ্ধদেব পাত্র, সংবাদদাতা- আজ "বাসি ভাতের পরব" রাঙামাটি পুরুলিয়ায়। সরস্বতী পুজোর দিন রান্না করে পরের দিন তা বাসি করে খেতে হয়। বহু বছর ধরে চলে আসা সাবেক মানভূমের এই নিয়মকে "সিজানো"পরব বলা হয়।
তরুণীর গোপন মুহূর্তের ছবি ছড়ানোর শাস্তি, ২ বছরের কারাদণ্ড যুবকের
এই সিজানো পরবে নয় রকম ডাল, নয় রকম সবজি এক সঙ্গে সেদ্ধ করে পরের দিনের জন্য রেখে দেওয়া হয় বাসি করে খাবার জন্য। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকম ভাজা,সবজি,চাটনি,সহ মাছের বিভিন্ন রকম পদ রান্না করা হয় শুধু মাত্র বাসি করে খাবার জন্য। আবার এই বাসি খাবার খাওয়ারও নিয়ম রয়েছে। এদিন শীল এবং নোড়াকে দেবী ষষ্টি রূপে পুজো করা হয়। কোনও বাড়িতে এদিন উনুন জ্বলবে না। হবে না রান্না। খাওয়া চলবে না গরম খাবার।
বউবাজার বাঁচাতে সতর্ক মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ, নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি
আগের দিনের রান্না করা খাবার পরের দিন পঞ্জিকা মতে দেবী ষষ্ঠীর পুজো করে তা খেতে হয়। শুধু তাই নয় বাসি ঘর, বাসি জল,বাসি ফুল দিয়ে বাড়ির রান্নার কাজে ব্যবহৃত শীল নোড়াকে দেবী রূপে পুজো করা হয়।বাসি ভাত খাওয়ার জন্য আত্বীয় বন্ধুদের এদিন নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়। আর বাসি ভাতের পরব উপলক্ষে পুরুলিয়ার দোকান বাজার রাস্তা ঘাট বন্ধের চেহারা নেয়।
পুরুলিয়ার লোক সংস্কৃতি গবেষক সুভাষ রায় জানান, আজকের দিনটিকে অরন্ধন দিবস বলা হয়। কারণ আজ জেলার নব্বই শতাংশ বাড়িতে রান্না হয় না। সকলেই বাসি খাবার খান। এর একটি বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, এই যে সরস্বতী পুজো আগে ঠিক বসন্তর প্রাক মুহূর্তে হত। যদিও এখন সেটা একটু আগে আগে হচ্ছে। বসন্ত কালে বসন্ত রোগ বা পক্স রোগ দেখা দেয়। তাই মশলাদার খাবার না খেয়ে বাসি খাবার বা সেদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এই বিষয়টাই বোঝানোর জন্য বহু কাল আগে বিভিন্ন শাক সবজি, ডাল, মাছ সরস্বতী পুজো বা বসন্ত পঞ্চমীর দিন রান্না করে পরের দিন বাসি করে খাবার প্রথা চালু হয়।
শহিদ মিনারে অমিত শাহের সভার অনুমতি দিল না পুলিশ, আদলতের দ্বারস্থ বিজেপি
বসন্ত কালের আগমণ জানান দেওয়া বেশি মশলা যুক্ত খাবার না খাওয়া এবং গুটি বসন্ত রোগ থেকে বাঁচতে মানভূমের পূর্ব পুরুষরা এই নিয়ম চালু করেছিলেন। যা আজ পুরুলিয়ায় 'সিজানো পরব' নামে পরিচিত। শীল নোড়াকে দেবী ষষ্ঠী রূপে পুজো প্রসঙ্গে সুভাষ রায় বলেন। এর পিছনে ধার্মিক কারণ থাকলেও মূলত আগের দিনের একান্নবর্তী পরিবারের এক সাথে থাকা খাওয়া গল্প গুজব করা র যে নিয়ম ছিল সেই বার্তা দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে আজ বাসি ভাতের পরব ঘিরে পুরুলিয়ার প্রতিটি প্রান্ত জমজমাট।