সংক্ষিপ্ত

বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শত্রুঘ্ন বলেন, "কোনও বাঙালির থেকে কম বাঙালিয়ানা নেই আমার মধ্যে। আমি কোনওভাবেই বহিরাগত নই। বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি আমার ভালোবাসা।"

'বিহারীবাবু' হিসেবেই পরিচিত তিনি। কিন্তু, তা বলে যে তাঁর বাংলার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই এটা বলা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ বাঙালিয়ানা রয়েছে তার মনের মধ্যে। বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কেও তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সম্প্রতি একথা জানিয়েছেন আসানলোন লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। আর এই কথার মাধ্যমেই 'বহিরাগত' বিতর্ককে দমানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শত্রুঘ্ন বলেন, "কোনও বাঙালির থেকে কম বাঙালিয়ানা নেই আমার মধ্যে। আমি কোনওভাবেই বহিরাগত নই। বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি আমার ভালোবাসা। আমি বাংলায় অনেক সিনেমা করেছি। গৌতম ঘোষের অন্তর্জলী যাত্রা থেকে শক্তি সামন্তের মস্তান করেছি। এই সব ছবিতে কোনও ডাবিং ছাড়াই বাংলায় সংলাপ বলেছি।" এই মন্তব্যের মাধ্যমেই নিজের গা থেকে 'বহিরাগত' তত্ত্ব উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।  

আরও পড়ুন- 'মমতা মনোনীত প্রার্থী হওয়াটাই জয়ের জন্য যথেষ্ট', আত্মবিশ্বাসী শত্রুঘ্ন, কেন সবার নজর আসানসোলে

উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে আসানসোলে বিজেপর টিকিটে জয়ী হয়ে সাংসদ হন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু, গত বছরই বিজেপি ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেন। তাই ওই কেন্দ্রে ১২ এপ্রিল উপনির্বাচন হয়েছে। আর সেখানে সবাইকে একেবারে চমকে দিয়ে প্রার্থী হিসেবে মমতা বেছে নেন শত্রুঘ্নকে। আসলে সেখানে হিন্দিভাষী ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি। সেই কারণেই তৃণমূলের তরফে শত্রুঘ্নকে বেছে নেওয়া হয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। কিন্তু, তারপর থেকেই বহিরাগত অস্ত্রে শান দিতে শুরু করে বিরোধীরা। আর সেই অস্ত্রকে হাতিয়ার করেই ভোটে লড়াই করে বিজেপি। যদিও এক্ষেত্রে বাংলার প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা বলে বহিরাগত বিতর্কে জল ঢালার আরও একবার চেষ্টা করলেন শত্রুঘ্ন।  

আরও পড়ুন- 'বাংলা গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার, পুড়িয়ে মেরে চাকরি দেওয়া হচ্ছে', বিস্ফোরক রাজ্যপাল

উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাকে পাখির চোখ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। আর সেই সময় কেন্দ্রের কোনও না কোনও নেতাকে প্রায় দিনই বাংলায় এসে প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, রাজনাথ সিং-সহ আরও অনেকেই। তখন তাঁদের বহিরাগত বলে কটাক্ষ করেছিল তৃণমূল। এমনকী, এও বলতে শোনা গিয়েছিল, যে বঙ্গ নেতৃত্বের উপর কেন্দ্রের ভরসা নেই। তাই বাইরে থেকে নেতাদের নিয়ে এসে প্রচার করা হচ্ছে। আর আসানসোলে শত্রুঘ্নকে প্রার্থী করার পর বহিরাগত তত্ত্ব বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের কাছে। 

এছাড়া বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জনপ্রিয় স্লোগান ছিল 'খেলা হবে'। এই স্লোগান এতটাই জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিল যে রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় রাজনীতির অন্দরেও। আর আজ সেই স্লোগানেও আজ শান দিয়েছেন শত্রুঘ্ন। তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই রয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ। খেলা হবে স্লোগানকে গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে আমি তাঁর হাতই আরও শক্ত করব।"