সংক্ষিপ্ত
বাবাকে মৃত দেখিয়ে ছেলের নামে রেকর্ড হল জমি। কাঠ গড়ায় ব্লক ভূমি সংস্কার দপ্তর। পুরুলিয়ার ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের পাটঝালদা ও ডুমুরিয়া মৌজার পাট ঝালদা গ্রামের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জীবন্ত বাবাকে মৃত দেখিয়ে নিজের নামে জমি রেকর্ড করে নিল ছেলে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার পাট ঝালদা গ্রামে(Jhalda village of Purulia)। ইতিমধ্যেই ঝালদা গ্রামের দেবাশীষ মাঝি ঝালদা ১ নম্বর ব্লক ভূমি সংস্কার দপ্তরে(land reform department) এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। তার সাফ দাবি, “আমি জীবিত রয়েছি। তা সত্ত্বেও আমার মৃত্যুর প্রমাণপত্র(Death certificate) ও বংশ পঞ্জিকা ঝালদা দড়দা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তা বের করে আমার বড় ছেলে সঞ্জয় মাঝি ঝালদা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর এর সাথে যোগাযোগ করে তার নিজের নামে ও আমার ছোট ছেলে মৃত্যুঞ্জয় এর নামে রেকর্ড করে নিয়েছে।” সূত্রের খবর ঝালদা ও ডুমুরিয়া মৌজার দুটি স্থানের মোট ১ একর ৮১ ডিসিমেল জমি রয়েছে দেবাশিষ বাবুর। সমস্ত জমিই দুই ভাই নিজেদের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি জানার পরই তিনি ঝালদা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে যোগাযোগ করেন।
এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। এদিকে এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করতে দেখা যায় বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শংকর মাহাতোকে। তীব্র কটাক্ষবান শানিয়ে তিনি বলেন, “এমন ঘটনায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। ভূমি দপ্তর এখন ঘুসের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। টাকা দিলে আধিকারিকরা ভূমি দপ্তরটিও যে কারও নামে রেকর্ড করে দিতে পারে। এমন ঘটনা একটা দুটো নয়, প্রচুর রয়েছে। এর পূর্ণ তদন্ত প্রয়োজন। যিনি এই কাজ করেছেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দরকার।”
আরও পড়ুন- করোনা ফাঁস আলগা হতেই নতুন ছন্দে জমে উঠেছে বাঙালির বড়দিন, জেলায় জেলায় উৎসবের মেজাজ
এদিকে ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পার্থ সন্ন্যাসী জানান তিনি ইতিমধ্যেই অভিযোগের কথা জানতে পেরেছেন। যদিও তার দাবি, “আসলে পঞ্চায়েতের দেওয়া সার্টফিকেট অনুযায়ী ভূমির সংশোধন করা হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তা খতিয়ে দেখে সমাধান করা হয়েছে।” এই ঘটনা জানার পরেই অনেকে রসিকতা করে পঙ্কজ ত্রিপাঠীর হিন্দি ছবি ‘কাগজের’(Pankaj Tripathi's Hindi film kagaj) কথা মনে করছেন। একধাকি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ওই ছবিতেও কার্যত একই ঘটনা দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। এবার যেন তারই প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া গেল ঝালদায়। এদিকে এই ডিজিটালের যুগেও জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে জমি রেকর্ড করে দেওয়া হচ্ছে। গোটা রাজ্যজুড়েই জমি দুর্নীতির শিকড়টা যে অনেক দূর পর্যন্ত চলে গিয়েছে তা মানছেন অনেকেই। এই নিয়ে ভূমি সংস্কার দপ্তর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন অনেকেই।