সংক্ষিপ্ত

 

  • বনফুল, ১৩৩৬ সালে বানী মন্দির গড়ে তোলেন  
  •  পাঠাগারকে সমৃদ্ধ করতে তিনি বই দান করেন 
  • ফের বাণী মন্দির' খুলে দেওয়ায় খুশি জিয়াগঞ্জবাসী 
  • পাঠাগার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করল পুরসভা 

প্রায় ৯০ বছরের পুরাতন বাংলার প্রবাদপ্রতিম সাহিত্যিক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় ওরফে বনফুলের স্মৃতি বিজড়িত 'বানী মন্দির' দীর্ঘ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পরে  ফের পুরোদমে খুলে দেওয়া হল সাধারণ মানুষের জন্য। জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার এই উদ্যোগে বানী মন্দির নামের এই পাঠাগার নতুন ভাবে চালু হওয়ায় খুশির হাওয়া লক্ষ করা গিয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে । 

শনিবার এই ব্যাপারে জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেঞ্জিত ঘোষ বলেন ,'এখন থেকে ওই পাঠাগার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করল পুরসভা । যাতে সঠিক সময়ে পাঠাগার খোলা হয় এবং পাঠাগারের সদস্যদের চাহিদা মত বই দেওয়া যায় তার জন্য দু জন লোক নিয়োগ করা হয়েছে ।'জেলার যমজ শহর হিসেবে পরিচিত জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ । এক সময় বানিজ্য নগরী হিসেবে এই শহরে বিভিন্ন প্রদেশের লোক জন ভীড় জমাতেন। কিন্তু বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় অর্থাৎ বনফুল এসেছিলেন স্থানীয় আজিমগঞ্জ এ জি হাসপাতালে চিকিৎসকের দায়িত্ব নিয়ে । তিনি অনুভব করেছিলেন বানিজ্য নগরীতে শিল্প সাহিত্যের চর্চার প্রয়োজন আছে । সে কথা ভেবে স্থানীয় কিছু মানুষ কে সঙ্গে নিয়ে ১৩৩৬ সালে বানী মন্দির নামের একটি পাঠাগার গড়ে তোলেন । 

আরও পড়ুন, কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে চাঁচল, একাধিক জায়গায় বসছে সিসিটিভি

ওই পাঠাগারের শ্রী বৃদ্ধি করতে তিনি  বেশ কিছু মূল্যবান বই সংগ্রহ করেন । পরবর্তীতে উৎসাহী মানুষ পাঠাগার কে সমৃদ্ধ করে তুলতে বই দান করেন । ফলে ওই পাঠাগার নিয়ে স্থানীয় পুস্তক পড়ুয়াদের মধ্যে আকর্ষণ বাড়তেই থাকে । পরবর্তীতে এই পাঠাগার কে কেন্দ্র করে এলাকার সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা শুরু হয় । ধিরে ধিরে গঞ্জ শহরে সাহিত্যের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকে । এহেন পাঠাগার টি বছর পাঁচেক আগে পুরপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে ফের যায় ।জানা গিয়েছে পাঠক হিসেবে এক সময় পাঠাগার টির দায়িত্ব গ্রহন করেছিলেন স্থানীয় রবীন্দ্র নাথ সাহা । তাঁর মৃত্যুর পর পাঠাগার আর কে চালাবে একথা ভেবে রবীন্দ্র নাথের পরিবার পাঠাগারের চাবি তুলে দেন এলাকার পুলিশ ফাঁড়িতে ।  

সূত্রের খবর, এলাকার একদল যুবক ও রিভাইব ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্টের অনুরোধে পাঠাগার টি ফের  চালু করার সিধান্ত গ্রহন করে জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভা । এখন থেকে নিয়মিত ওই পাঠাগার সঠিক সময়ে খোলা হবে আবার পাঠক সমাগম করতে সমস্ত রকম চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে । আগের বই তো আছেই ইতিমধ্যে নতুন ভাবে পাঠাগার চালু করতে পুরসভা আরও বেশ কিছু বই ক্রয় করে । পাঠকদের চাহিদা মেনে বই সহ অন্যন্য জিনিসপত্র ক্রয় করে পাঠাগার কে সাজিয়ে তোলা হবে জানিয়ে দেন পুরসভার চেয়ারম্যান । এদিকে পুরসভার এই উদ্যোগ কে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় কবি সাহিত্যিক সমীর ঘোষ , প্রবীন শিক্ষা বিদ অমিরন চৌধুরী , নতুন প্রজন্মের রানা পাণ্ডে ,প্রবীন মন্ডল। তাদের দাবি,' বনফুলের স্মৃতি বিজরিত  তো বটেই , একটি পাঠাগার এলাকার সুস্থ সমাজ গড়তে বিশেষ ভুমিকা পালন করে । সেই দিক থেকে পুর কর্তৃপক্ষ বন্ধ হয়ে যাওয়া পাঠাগার টিকে ফের চালু করে একটি বড় পদক্ষেপ করল ।'