সংক্ষিপ্ত
মানসিক ও শারীরিক জীবনে শৈশব মন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই এবার তাদের মুক্তির স্বাদ দেবে খোলা আকাশের নিচে পুতুলনাচের আসর।
একসময় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ছিল পুতুল নাচ (tradition of puppet dance), কবির কবিতায় কলমে ফুটে উঠত পুতুল নাচের ইতিকথা। আজ পুরোটাই ইতিহাস (History)। তাই পুতুল নাচের সংস্কৃতি (Tradition) ধরে রাখতে বসিরহাট মহকুমার (Basirhat) স্বরূপনগর ব্লকের চারঘাট গ্রামীণ সংস্কৃতি বইমেলা কর্তৃপক্ষ ১১ তম বর্ষে নিজেদের মূল আকর্ষণ রেখেছে পুতুল নাচ। নদীয়া থেকে এক ঝাঁক পুতুল নাচের শিল্পী তাদের শিল্পকলা তুলে ধরবে মোট ৭দিন ধরে, চলবে পুতুল নাচের আসর চারঘাট মেলা প্রাঙ্গণে।
আধুনিক সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কচিকাঁচারা মোবাইলের ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব খুলে সময় কাটাচ্ছে। মোবাইলের কুফল শৈশব মননে ঘরবন্দী হচ্ছে। কচিকাঁচারা মনের বিকাশ যেমন প্রতিহত হচ্ছে, অন্যদিকে শিশুমন মোবাইলের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। মানসিক ও শারীরিক জীবনে শৈশব মন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই এবার তাদের মুক্তির স্বাদ দেবে খোলা আকাশের নিচে পুতুলনাচের আসর। শৈশব কিশোর মনের বিকাশ ঘটানোই মূল লক্ষ্য করে এই আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে। বহু ছাত্র ছাত্রীর সঙ্গে অভিভাবকরাও এই পুতুলনাচ দেখতে এসেছে।
ছাত্রী প্রজ্ঞা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন অনেকদিন পরে পুতুল নাচ দেখতে পেয়ে ভালো লাগছে। ঐতিহ্যবাহী পুতুলনাচ সামনে থেকে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন সবাই। চারঘাট বইমেলা রেনেসাঁস সংস্কৃতি চক্রের উদ্যোক্তা ভৈরব মিত্র বলেন বহু পুরনো সংস্কৃতি ইতিহাস এই পুতুলনাচের থেকে বাঁচানোর জন্য আমরা এই পুতুল নাচের আসর বসিয়েছি। যাতে নতুন প্রজন্ম নিজেদের মনের বিকাশ ঘটাতে পারে। এই পুতুল নাচ দেখতে সীমান্তে গ্রামবাংলা থেকে কচিকাঁচারা ভিড় জমিয়েছে, শীতের পড়ন্ত বেলায়। গ্রাম্য মেলা আর গ্রাম্য মেলা মানেই পুতুল নাচ।
শিল্পীরা জানাচ্ছেন এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে আমাদের সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন। এই শিল্পকলার সঙ্গে বহু শিল্পীরা জড়িত। নদীয়ার পুতুল নাচ শিল্পী নারায়ণ রায় বলেন, গ্রামবাংলায় একসময় এই সংস্কৃতি শিল্পকলা সব সময় দেখা যেত। এখন এই শিল্পের সঙ্গে কেউ আসতে চাইছে না অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। এত পরিমান মোবাইল সবার হাতে, সবাই সোশ্যাল মিডিয়া আসক্ত হয়ে পড়ছে। তার জন্য এই সংস্কৃতি মানুষ ভুলতে বসেছে আজ, এই শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। আগে কোনও জায়গায় ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে এই পুতুল নাচের আসর বসত। এখন কোন ক্লাব বা বিয়ে বাড়িতে কেউ ফোন করলে একদিনের জন্য আমরা যাই, যৎসামান্য মূল্য পাই। যত সময় যাচ্ছে ততই এই শিল্প সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার।