সংক্ষিপ্ত
- বিধানসভা ভোটের মুখে ব্লকে ব্লকে তৃণমূলের কর্মিসভা
- অনুন্নয়ন ও দুর্নীতির অভিযোগে মেজাজ হারালেন অনুব্রত
- 'অপদার্থ' বলে কটাক্ষ করলেন কৃষিমন্ত্রীকে
- বিতর্ক তুঙ্গে রাজ্য়ের শাসকদলের অন্দরে
আশিষ মণ্ডল, বীরভূম: এলাকায় একের এক অনুন্নয়ন আর দুর্নীতির অভিযোগে মেজাজ চড়ল সপ্তমে। ভরা কর্মিসভায় এবার খোদ কৃষিমন্ত্রী আশিষ বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেই অপদার্থ বলে কটাক্ষ করলেন অনুব্রত মণ্ডল। এমনকী, মন্ত্রীর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য়বিনিময়ও চলল বেশ কিছুক্ষণ। বিতর্ক তুঙ্গে তৃণমূলের অন্দরে।
আরও পড়ুন: নবান্ন অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র শহর, বিজয়বর্গীয়-মুকুলদের নামে এফআইআর
বিধানসভা ভোটের প্রায় রোজই বীরভূমের কোনও না কোনও ব্লকের চলছে তৃণমূলের বুথভিত্তিক কর্মী সম্মেলন। ব্যতিক্রম ছিল না শুক্রবারও। এদিন রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের আয়াস, নারায়ণপুর ও কুসুম্বা অঞ্চলের দলের বুথকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। স্থানীয় আয়াস অঞ্চলের ৪০ নম্বর বুথে লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী লিড নিয়েছিলেন ৭১১ ভোটে। কেন এতো ভোটে হার? অনুব্রতের প্রশ্নে বুথ সভাপতি সোজাসাপ্টা জবাব, 'উন্নয়ন হয়নি তাই।' একথা শুনে মেজাজ চড়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেসে জেলা সভাপতি। বুথ সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'মাইকে বলে দাদাগিরি করবেন না। যা বলার লিখিত দিন। মুখে কিছু বলবেন না।' হারের কারণ নিয়ে যখন দ্বিতীয় বার প্রশ্নের মুখে পড়ে, তখন বুথ সভাপতি বলতে শুরু করেন, 'আমরা আগে কংগ্রেস করতাম। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেছি। প্রথমে আমি বুথের সচিব ছিলাম। তখন গ্রামে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কোন উন্নয়ন হয়নি। এখনও পর্যন্ত গ্রামের রাস্তা ২০ শতাংশ ঢালাই হয়েছে। ভোট করতে গেলে মানুষ রাস্তা আর পানীয় জলের দাবি জানাচ্ছে। আমরা আট-দশবার প্রধানকে বলেছি। পঞ্চায়েত থেকে রাস্তার ছবি হল। কিন্তু এখন বলছে পুজোর আগে হবে না।'
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান,জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে
বুথ সভাপতি অভিযোগ শোনার পর পঞ্চায়েত প্রধান রেজাউল করিমের কাছে রাস্তা তৈরি না করার কারণ জানতে চান অনুব্রত। প্রধান বলেন, 'লক্ষ্মীবাটি গ্রামে আগে রাস্তা করা হয়েছিল। সেই রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। নতুন যে রাস্তা এসেছে তা সংসদ ভিত্তিক ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।' কথায় কথায় জানা যায়, রেজাউল করিম আবার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিও বটে। এরপর আর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি অনুব্রত। বলেন, 'যেই প্রধান, সেই অঞ্চল সভাপতি? তাহলে ভোটে জয় আসবে কিভাবে! আর অপদার্থ আছেন ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন আর আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।' শুধু তাই নয়, কর্মিসভার কৃষিমন্ত্রী ও শাসকদলের জেলা সভাপতির মধ্যে বাক্য় বিনিময়ও চলে। কর্মিসভা শেষে কৃষিমন্ত্রীর আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, 'অনুব্রতর সঙ্গে আমাদের দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক। তেমন কিছু বলেনি, তবে স্নেহ করেছে। তাছাড়া অনেক বুথ সভাপতি ও কর্মীরা তো আমার সুনাম করেছেন। উন্নয়নের কথা বলেছেন।'