সংক্ষিপ্ত
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মাঝেই প্রশাসনিক জটিলতা মুর্শিদাবাদে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতির ফাঁকা আসন নিয়ে বাড়ছে চাপানউতর। দুই ফাঁকা আসনে নির্বাচনের জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৈরি হয়ে রয়েছে চরম প্রশাসনিক জটিলতা! শুরুটা হয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের(Assembly election) পর থেকে। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বিশেষ সূত্রে খবর, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদ সফর(Chief Minister's visit to Murshidabad) চলাকালীন জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি নির্বাচনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয় জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। জেলা পরিষদের দলনেতা তজুমুদ্দিন বলেন, “কয়েকদিন আগে জেলা পরিষদের সদস্যরা আলোচনায় বসে একটি রেজ্যুলিউশন করেছি। সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি নির্বাচনের বিষয়টি দেখার জন্য আমরা লিখিত আবেদনপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিচ্ছি। সেটি মুখ্যমন্ত্রীকেও(Chief Minister Mamata Banerjee) দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে এদিন ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ করে সদর শহর বহরমপুরের(Bahrampur) রবীন্দ্র সদনে প্রশাসনিক আধিকারিক সহ জনপ্রতিনিধি বিধায়ক, সাংসদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে একাধিক বিষয়ের মধ্যে পর্যটন, বিড়ি শ্রমিক, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদ জেলাতে পর্যটনে জোর দিতে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষরা ছিলেন।
আরও পড়ুন-নজরে মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফর, ৫০টির বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন মমতার
তবে দু’জন কর্মাধ্যক্ষ প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেবেন কি না তা নিয়ে শুরু থেকে জল্পনা ছিল। বিধানসভা ভোটের পর থেকে তাঁদের দু’জনকে জেলা পরিষদে খুব বেশি দেখা যায়নি। জেলা পরিষদের এক সদস্য বলেন, সভাধিপতি বা সহ-সভাধিপতি না থাকার জন্য উন্নয়ন থমকে নেই। তবে কাজ করতে বিভিন্ন রকম সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি নির্বাচন করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চয় বিবেচনা করে দেখবেন। সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদের সভাধিপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশের দিকেই এখন চেয়ে রয়েছে সকলে। অন্যদিকে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাতের কাছে পেয়ে বুধবার বহরমপুর মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের জটিলতা কাটাতে সভাধিপতি ও সহ-সভাপতি নিয়োগের জন্য শেষ পর্যন্ত আবেদন জানানো হয়। বিশেষ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী তড়িঘড়ি পুরো বিষয়টি বিবেচনা করে পঞ্চায়েত দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কে তদারকি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলত, রাজনৈতিক মহলের ধারণা খুব দ্রুত মুর্শিদাবাদ জেলার উত্তর থেকে দক্ষিণ নানান উন্নয়নমূলক কাজের জটিলতা নতুন সভাপতি ও সহ-সভাপতি নিয়োগ এর মধ্যে দিয়ে মিটতে চলেছে। যদিও তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই জেলা পরিষদের ওই দুই তাৎপর্যপূর্ণ পদে কাদেরকে বসানো হবে তৃণমূল দলের অভ্যন্তর থেকে সে নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব।
এদিকে বিড়ি শিল্পের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদের অর্থনীতির একটা বড় অংশ। বহু মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে পরোক্ষ কিংবা প্রত্যেক্ষ ভাবে যুক্ত। কিন্তু কেন্দ্রের নতুন নীতি ও তামাকজাত বিষয়ে একগুচ্ছ বিধিনিষেধের জেরে ধুঁকছে বিড়ি শিল্প। সঙ্গে দীর্ঘ লকডাউনে পশ্চিমবঙ্গে এই শিল্পের হাল আরও খারাপ হয়েছে। বুধবারের প্রশাসনিক বৈঠকে সেই বিষয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবগত করেছেন মুর্শিদাবাদের বিধায়ক ও সাংসদরা। আগামীতে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেন কিনা সেদিকেও নজর রয়েছে সকলের।