সংক্ষিপ্ত

  • পশ্চিম মেদিনীপুরের এনায়েতপুরের ঘটনা
  • আট বছর ধরে বন্ধ সিপিএমের পার্টি অফিস
  • বন্ধ পার্টি অফিস পরিষ্কার করে দিল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত
  • তৃণমূল- সিপিএমকে কটাক্ষ বিজেপি নেতৃত্বের
     

শাজাহান আলি, পশ্চিম মেদিনীপু: আট বছরে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। বদলে গিয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও। তাই প্রকাশ্যেই বার বার বিজেপে-কে রুখতে বামেদের সহযোগিতা চেয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বামেদের প্রতি তৃণমূলের সেই বন্ধুত্বের নজিরই উঠে এল পশ্চিম মেদিনীপুরের এনায়েতপুরে। তৃণমূলের দাপটে প্রায় আট বছর বন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকা সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ই পরিষ্কার করে দিল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। 

২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকেই মেদিনীপুর সদর ব্লকের সিপিএমের এনায়েতপুর লোকাল কমিটির অফিসটি বন্ধ করে এলাকা ছেড়েছিলেন কর্মীরা৷ তখন থেকেই এই কার্যালয়টি পরিত্যক্ত হিসেবে পড়েছিল। দরজা, জানলা ভেঙে লুঠপাটও হয়েছে ৷ ঝোপঝাড়, আগাছাতে ঢেকে গিয়েছিল চারপাশ৷ পরিত্যক্ত ভবন হিসেবেই পড়েছিল তিনতলা পার্টি অফিস। সম্প্রতি এই দলীয় কার্যালয় চত্বরকে পরিষ্কার করে দেয় তৃণমূলের স্থানীয় মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত ৷ তারপর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা ৷

গত কয়েকদিন আগেই দেখা গিয়েছে এনায়েতপুর লোকাল কমিটির অফিস চত্বরটি হঠাৎ করে পরিষ্কার করা হচ্ছে। সাফসুতরো অফিস দেখে অনেকেই ভাবতে শুরু করে দেন সিপিএমের নেতারা বোধ হয় ফের কার্যালয়ে কাজ শুরু করবেন ৷ তাই পরিষ্কার করা হয়েছে ৷  কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় স্থানীয় মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পার্টি অফিসটি পরিষ্কার করা হয়েছে ৷ তার পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা৷ অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, বিজেপি এলাকায় মাথা তুলছে বলেই সিপিএমেক হারানো জমি ফিরিয়ে দিতে চাইছে তৃণমূল৷ যাতে জঙ্গলমহলে বিজেপি-র বৃদ্ধি প্রতিরোধ করা যায়। গত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে একপেশে ফল করেছে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে পায়ের তলার মাটি ফিরে পেতে এখন তাই বামেদের হাত শক্ত করা ছাড়া বিশেষ উপায়ও নেই তৃণমূল নেতৃত্বের। 

আরও পড়ুন- জুয়ার আসরে পুলিশ হানা, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি-সহ গ্রেফতার এক ডজন ছাত্র- যুব নেতা

আরও পড়ুন- পুজোয় 'স্বর্গের নীচে মহাবিশৃঙ্খলা', বই আসছে বুদ্ধদেবের

বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত দাস অবশ্য কটাক্ষ করে বলেন, 'তৃণমূলই যে সিপিএমকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা মানুষ বেশ বুঝতে পারছেন৷'  স্থানীয় মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৩টি আসন। এর ৭টি তৃণমূলের দখলে। ৬টি পেয়েছিল বিজেপি। মণিদহ সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে আরও তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত, চাঁদড়া, ধেড়ুয়া আর কঙ্কাবতী। এর মধ্যে কঙ্কাবতী ছাড়া বাকি দু’টি বিজেপির দখলে। সবদিক থেকেই বিজেপির উত্থান স্পষ্ট ৷ তাই এই দলীয় কার্যালয় পরিচ্ছন্ন করে আসলে পরোক্ষে এলাকায় সিপিএমের সংগঠনকে শক্তিশালী করাই যে শাসক দলের লক্ষ্য তা স্পষ্ট ৷  সিপিএমের পক্ষ থেকে অবশ্য এমন সহযোগিতা নেওয়ার কথা অস্বীকার করা হয়েছে ৷  সিপিএম নেতা দেবাশীষ দত্ত বলেন, 'আমরা আমাদের মতো করে দলীয় কার্যালয় যেখানে সম্ভব খোলার চেষ্টা করছি ৷ সেখানে তৃণমূলের কোনও সহযোগিতা দরকার হয়নি, নেবও না ৷

তবে তৃণমূলের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা অবশ্য রাজনৈতিক জল্পনা উড়িয়ে দাবি করেন, 'ওই পার্টি অফিসের পাশেই একটি অঙনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে ৷ পার্টি অফিসটি জঙ্গলে ঢাকা থাকার কারণে সেখানে সাপের উপদ্রব বাড়ছিল ৷ ৭ বার সাপ বেরিয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৷ তাই পুরো এলাকা পরিষ্কার করা হয়েছে ৷ এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই ৷'