সংক্ষিপ্ত
দুই গৃহবধূ দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার দিন থেকেই সুইচ অফ অনন্যা ও রিয়ার মোবাইল।
প্রেমের টান উপেক্ষা করা বড়ই কঠিন। সে প্রমাণ আগেই দিয়েছেন হাওড়ার (Howrah) নিশ্চিন্দার আনন্দনগরের দুই গৃহবধূ (Two missing housewives)। বাড়িতে কাজ করতে আসা রাজমিস্ত্রির (masons) হাত ধরে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন দুই জা। তবে তাতেও শেষরক্ষা হল না। কারণ, মুম্বই থেকে এ রাজ্যে ফেরার পথে আসানসোল স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হল দুজনকেই।
পুলিশ সূত্রে খবর মাসছয়েক আগে একতলা বাড়ি সংস্কারের কাজ করতে এসেছিলেন দুই রাজমিস্ত্রি। তাঁদের দু’জনকে প্রথম দেখাতেই ভাল লেগে যায় নিশ্চিন্দা আনন্দ নগরের দুই গৃহবধূ রিয়া এবং অনন্যা কর্মকারের। দুই রাজমিস্ত্রি সুভাষ ও শেখরকে তাঁদের পছন্দ হয়ে যায়। প্রথমে আলাপ। তারপর মোবাইল নম্বর বিনিময় হয়। ওই দুই রাজমিস্ত্রি যখন বাড়িতে কাজ করছিলেন তখনই প্রথমে দুপুরবেলা বাড়ির কর্তাদের অনুপস্থিতিতে চলত খুনসুটি, প্রেমালাপ। দুই গৃহবধূর দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে সেই প্রেমালাপই গত ৬ মাসে গভীর হয়।
অবশেষে দুই গৃহবধূ দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনার দিন থেকেই সুইচ অফ অনন্যা ও রিয়ার মোবাইল। দুই গৃহবধূর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করেই তদন্তে সাফল্য পায় পুলিস। বড় বউ অনন্যার মোবাইলের কল লিস্টের সূত্র ধরে তদন্তে সাফল্য আসে। কল লিস্টে একটি অচেনা নম্বর থেকে বেশ কয়েকবার ফোন এসেছিল নিখোঁজ হওয়ার দিন। জানা যায় ওই নম্বর ছিল রাজমিস্ত্রি সুভাষের। রবিবার মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকায় অভিযান সুভাষের বাড়িতে অভিযান চালায় নিশিন্দা থানার পুলিস।
জানা যায় এখানে একদিন থাকার পর মুম্বই (Mumbai) চলে যায় সবাই। আপাতত মুম্বাইয়ের তাদের সঠিক অবস্থান জানার চেষ্টা শুরু করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। একটি বিশেষ দল গঠন করে মুম্বইতে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়। তবে রাজমিস্ত্রির প্রেমে পড়ে দুই বিবাহিত মহিলার এমন কাণ্ড অবাক করে সকলকেই।
তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, গত ১৫ ডিসেম্বর দুই গৃহবধূর একজনের মোবাইলে একটি ফোন আসে। সেই ফোন কলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুর্শিদাবাদ চলে যাওয়ার কথা বলা হয়। কারা গৃহবধূর মোবাইলে ফোন করে তা খুঁজতে গিয়েই পুলিশ দুই রাজমিস্ত্রির খোঁজ পান। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে, ওই দুই রাজমিস্ত্রি দুই গৃহবধূকে নিয়ে চলে যান। পুলিশের ধারণা, প্রথমে শ্রীরামপুরে সাক্ষাৎ করে সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ চলে যায়। এরপর সেখান থেকে চলে যায় মুম্বই।
তবে কোথায় তারা ছিল, তা খোঁজ করছিল পুলিশ। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, ওই দুই গৃহবধূ তাঁদের প্রেমিকের সঙ্গে ভোরবেলায় আসানসোল স্টেশনে আসবে। সেখান থেকে ট্রেন পরিবর্তন করবে তারা। রিয়ার সঙ্গে সন্তানও থাকতে পারে বলেই জানতে পারে পুলিশ। সেই অনুযায়ী পুলিশ আসানসোল স্টেশন থেকে পাঁচজনকে আটক করে। এরপর তাঁদের হাওড়ার নিশ্চিন্দা থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়।