সংক্ষিপ্ত
- ভুয়ো টিকাকাণ্ডে গ্রেফতার আরও ২ জন
- দেবাঞ্জনের তুতো দাদা গ্রেফতার
- তুতো দাদার প্রতারণার শিকার হন দেবাঞ্জন
- এই ঘটনায় ১০জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা
যতই দিন যাচ্ছে ততই কসবা ভুয়ো টিকাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে আসছে। প্রতিদিনই কোনও না কোনও নতুন তথ্য পাচ্ছে পুলিশ। এবারও নাকি তদন্তকারীদের অবাক করে দিয়েছেন দেবাঞ্জন। জানিয়েছেন, তিনি নিজেও নাকি প্রতারিত হয়েছিলেন। তাও আবার নিজের তুতো দাদার কাছেই। ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের তুতো দাদা কাঞ্চন দেবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- রীতিমত ছক কষে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়েছে, কেন্দ্রের কাছে জমা পড়ল রিপোর্ট
দেবাঞ্জন যে আদতে কোনও আইএএস নন তা আগে থেকেই জানতেন কাঞ্চন। জেরার সময় তদন্তকারীদের দেবাঞ্জন জানান, অফিসের কোনও কিছু কেনার হলে, কোনও টাকার প্রয়োজন হলে, তাঁর কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করতেন কাঞ্চন। ভুয়ো টিকা কাণ্ডের যাবতীয় বিষয়ের কথাও কাঞ্চন জানতেন। তখনই নাকি দেবাঞ্জন বলেছেন যে তিনি নিজেই দাদার কাছে প্রতারিত হয়েছে। তারপরই ওই বয়ানের প্রেক্ষিতে কাঞ্চনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এছাড়া ভুয়ো টিকাকাণ্ডে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম শরৎ পাত্র। নর্থ সিটি কলেজে পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের টিকা দিয়েছিলেন তিনি। জেরায় তিনি জানিয়েছেন, বেশি দূর পড়াশোনা করেননি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। তবে ওই টিকা নিয়ে তাঁরও সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু, দেবাঞ্জনের উপর কথা বলার সাহস পাননি। সূত্রের খবর, দেবাঞ্জন, শরৎ ও কাঞ্চনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করবেন তদন্তকারীরা। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১০জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ১ জুলাই পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে, ভাসবে উত্তরবঙ্গ
এর আগেও পুলিশি জেরার মুখোমুখি হয়েছিলেন দেবাঞ্জন। ২০২০ সালের মার্চ মাস। দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে ইলেক্ট্রনিক কমপ্লেস থানায় একটি অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে চাকরিতে প্রতারণার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না থাকায় ছাড় পেয়েছিলেন। আর তখনই নাকি তাঁর বাবা-মা জানতে পেরেছিলেন যে ছেলে আসলে আইএএস নন। এই বিষয়ে তাঁর বাবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান গোয়েন্দারা। কিন্তু, করোনা হওয়ায় এই মুহূর্তে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তিনি। তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন- ভ্যাকসিন নিলেও মেলেনি মেসেজ, রাজ্যে কি নানা জায়গায় ছড়িয়ে ভুয়ো সেন্টারের জাল
রবিবার দেবাঞ্জনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। তাঁর বাড়ি থেকে বেশকিছু নথি, ডেবিড কার্ড, পাসবুক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দেবাঞ্জন পুলিশকে জানিয়েছে, একাধিক সরকারি এজেন্সিগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করতেন। তার ফলে সরকারি স্ট্যাম্প পেপার ও লেটারপ্যাড পেয়ে যেতেন। জানা গিয়েছে, প্রতারণা চক্র চালানোর জন্য বলিউড সিনেমা 'স্পেশাল ২৬'-এর কায়দায় লোকও নিযুক্ত করেছিলেন তিনি। জেরার সময় তিনি জানিয়েছে, গত বছর সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে লোক নিয়োগ করা শুরু করেছিলেন। তাই এই ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকেই যুক্ত রয়েছেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের।