সংক্ষিপ্ত

বাংলা পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে বাংলার চিন্তাশীলতার পরিসরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি কেবল নবজাগরণের একজন কাণ্ডারীই নন, বরং গোটা ভারতবর্ষে চিন্তন এবং মননের বিস্তারে আধুনিকতার পথপ্রদর্শক। আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের যে, আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরী।

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রাণপুরুষ তথা বাংলা ভাষার জনক ও বাঙালি জীবনের স্মারক সিংহশিশু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ঈশ্বরচন্দ্রের হাত ধরে এসেছে তৎকালীন সমাজে নারীর ওপর অত্যাচার থেকে মুক্তি। কারণ তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে নারীশিক্ষার প্রগতি না করতে পারলে নারী সমাজের অগ্রগতি কখনই সম্ভব না। নারীমুক্তি আন্দোলন ছিল তাঁর জীবনের পাথেয়। সেই সিংহশিশু বিদ্যাসাগরের ২৬ শে সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বাঙালি জাতির শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনটিকে যাতে বাংলার জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়- সেই দাবি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষর তরফে চিঠিটি লিখেছেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়। 

বাংলা পক্ষর বিগত ৫ বছর ধরে ২৬ এ সেপ্টেম্বর বাংলা জুড়ে শিক্ষক দিবস পালন করছে। প্রতি জেলা থেকে একজন শিক্ষককে (যিনি শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন) "বিদ্যাসাগর শিক্ষক সম্মাননা" প্রদান করে। এবারও বাংলা পক্ষ ২৩ টি সাংগঠনিক জেলায় একজন মহান শিক্ষককে"বিদ্যাসাগর শিক্ষক সম্মাননা" প্রদান করবে। বাংলা পক্ষের আবেদন, ২৬ শে সেপ্টেম্বর দিনটিকে পাড়ায়, স্কুলে-কলেজে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন করুন। 

বাংলা পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে বাংলার চিন্তাশীলতার পরিসরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি কেবল নবজাগরণের একজন কাণ্ডারীই নন, বরং গোটা ভারতবর্ষে চিন্তন এবং মননের বিস্তারে আধুনিকতার পথপ্রদর্শক। আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের যে, আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরী। তিনি আক্ষরিক অর্থেই আমাদের জাতির শিক্ষক, কারণ আজও বাঙালির ঘরের সন্তানরা তাঁর বর্ণপরিচয়ের মাধ্যমে অক্ষর জ্ঞান লাভ করে। আমাদের শিক্ষার যে মূল ভিত্তি তার অনেকাংশেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সদা জাগ্রত। নারী শিক্ষার প্রসারে তাঁর ভূমিকা আন্তঃরাষ্ট্রীয় স্তরে স্বীকৃতির দাবি রাখে।

আরও পড়ুন বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বাংলায় কথা বলার 'অপরাধে' হুমকির মুখে মহিলা সাংবাদিক, প্রতিবাদে বিক্ষোভ বাংলা পক্ষের

বাংলা পক্ষের দাবি বাংলা তথা গোটা ভারত এই মহাপুরুষের যথেষ্ট মূল্যায়ন এবং সম্মান এখনো করতে পারেনি। যে সময় হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ভারত তথা বাংলাকে অন্ধকারে ঢেকে ফেলতে চাইছে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে আরও দৃঢ়ভাবে ধারণ করা, তাঁর চেতনা, তাঁর দর্শনের সঙ্গে জাতির সম্পৃক্ততা আরও বিস্তার করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। এই অন্ধকারের আবহে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সেই আলোকবর্তিকা যা বাঙালি জাতিকে প্রতিরোধের অনুপ্রেরণা জোগাবে। এই বিষয়টিকে অনুধাবন করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলা পক্ষ। 

আরও পড়ুন কাস্ট সার্টিফিকেট জাল করে ভর্তি ভিন রাজ্যের পড়ুয়া, স্বাস্থ্য দপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে সরব বাংলা পক্ষ

সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে যাতে ২৬শে সেপ্টেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনটিকে বাংলার জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলা পক্ষর এই দাবিপত্রে ইতিমধ্যে সমর্থন জানিয়েছেন বাংলার প্রথিতযশা ব্যক্তিরা। কবি, সাহিত্যিক, অভিনেতা, উপাচার্য, পরিচালক, প্রযোজক, সঙ্গীতশিল্পী, নাট্যকার, যন্ত্রশিল্পী, আবৃত্তিকার, বাচিকশিল্পী, অর্থনীতিবীদ, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক থেকে শুরু করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানরা এই দাবিপত্রে সমর্থন জানিয়েছেন।

১। জয় গোস্বামী, কবি
২। পবিত্র সরকার, শিক্ষাবিদ 
৩। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক
৪। জয়া মিত্র, পরিবেশ কর্মী ও লেখিকা
৫। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, পুরাণবিদ
৬। তপোধীর ভট্টাচার্য, প্রাক্তন উপাচার্য, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়
৭। সবুজকলি সেন, প্রাক্তন উপাচার্য, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
৮। গৌরব চক্রবর্তী, কবি, সাহিত্য আকাডেমি যুব পুরস্কারপ্রাপ্ত
৯। সৃজিত মুখার্জী, চিত্র পরিচালক
১০। উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়, আবৃত্তিকার, বাচিকশিল্পী
১১। রানা সরকার, প্রযোজক
১২। সুবোধ সরকার, কবি
১৩। রূপম ইসলাম, সঙ্গীতশিল্পী
১৪। শ্রীজাত বন্ধ্যোপাধ্যায়, কবি
১৫। রূপঙ্কর বাগচী, সঙ্গীতশিল্পী
১৬। জয় সরকার, সঙ্গীতশিল্পী
১৭। রাঘব চট্টোপাধ্যায়, সঙ্গীতশিল্পী
১৮। দীপঙ্কর দে, অর্থনীতিবিদ
১৯। তথাগত মুখার্জী, অভিনেতা, পরিচালক
২০। রাহুল অরুনোদয় ব্যানার্জী, অভিনেতা
২১। অয়ন চক্রবর্তী, চিত্র পরিচালক
২২। সৌম্য সেনগুপ্ত, চিত্র পরিচালক
২৩। অনির্বাণ মাইতি, চলচ্চিত্র সম্পাদক
২৪। সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাবন্ধিক
২৫। অরূপ শঙ্কর মৈত্র, নাট্যকার
২৬। ব্রত চক্রবর্তী, কবি
২৭। বুদ্ধদেব পাল, সরোদ শিক্ষক
২৮। দেবারতি মুখোপাধ্যায়, সাহিত্যিক
২৯। সোহম মুখোপাধ্যায়, যন্ত্রশিল্পী
৩০। হেমন্ত জানা, গল্পকার
৩১। সৌমিত্র রায়, সঙ্গীতশিল্পী
৩২। শুভেন্দু মাইতি, সংগীতশিল্পী
৩৩। অনুরাধা পাত্র, সঙ্গীতশিল্পী
৩৪। উজ্জয়িনী ভট্টাচার্য, সঙ্গীতশিল্পী
৩৫। ইমন সেন, সঙ্গীতশিল্পী
৩৬। অমর মিত্র, লেখক, সাহিত্যিক
৩৭। সৌভিক রাজ, লেখক
৩৮। দীপাঞ্জন দাস, সম্পাদক, কচিপাতা
৩৯। হিমাংশু দাস, সহসম্পাদক, আগন্তুক পত্রিকা