সংক্ষিপ্ত
মাটির প্রদীপের সঙ্গে এখন জোর লড়াই চিনা টুনি বাল্বের । এই অবস্থায় মাটির প্রদীপ আর মৃৎশিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়ে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন মালদার স্কুল পড়ুয়া।
দীপাবলিতে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপ। বদলের জায়গা করে নিচ্ছে চীনের বাজারে তৈরি হওয়া টুনি বাল্ব। কিন্তু একটা সময় গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে আলোর উৎসবে মাটির প্রদীপ দিয়ে সাজানো হতো। আবারও সেই হারিয়ে যাওয়া মাটির প্রদীপ ফিরিয়ে আনতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন পড়ুয়া অংশুমাব চক্রবর্তী। তিনি কালীপুজোর আগেই মাটির প্রদীপের ব্যবহার বাড়াতে সোশ্যাস মিডিয়ায় ক্যাম্পেই শুরু করেছেন। "ভোকাল ফর লোকাল" ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবেই দাবি করছেন তিনি।
যদিও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় মাঝে মাঝেই ক্যাম্পেন হয় "ভোকাল ফর লোকাল"। চীনা দ্রব্য ব্যবহার করা বন্ধের পক্ষে অনেকেই সওয়াল করেন। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন তেমন ভাবে দেখা যায় না। এই দিকে দিনের পর দিন মাটির প্রদীপ বিক্রির হার কমে যাওয়াই আর আগের মত আনন্দ উজ্জ্বল হয় না মৃৎ-শিল্পীদের দীপাবলি। সেই মৃৎ-শিল্পীদের মুখেই হাসি ফোটানোর জন্য এক অসাধারণ উদ্যোগ পঞ্চম শ্রেণীর খুদে পড়ুয়ার। এইটুকু বয়সে তার এই ধরনের চিন্তা ভাবনা সমাজের সকলের কাছে শিক্ষণীয়। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামের ছেলে অংশুমান চক্রবর্তী। মালদা শহরের সিস্টার নিবেদিতা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। প্রত্যেক বছর কালী পুজোতে একই ধরনের প্রদীপ দেখা যায়। সাঙ্গে দেখতে পাচ্ছে প্রদীপের ব্যবহার কমছে, বাড়ছে চীনের টুনি বাল্বের ব্যবহার। তাই সে এই বছর উদ্যোগ নেয় তার শিল্পকলার মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে তুলবে মাটির প্রদীপকে। ছোট থেকেই আর্ট এন্ড ক্রাফট এবং অঙ্কনে তার হাত বেশ ভালো। এলাকার মৃৎ-শিল্পীদের কাছ থেকে মাটির প্রদীপ কিনে এনে সেগুলিকে রং করে অংশুমান। তার উপর নিপুন দক্ষতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে বিভিন্ন নকশা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের প্রদীপ নজর কারবে মানুষের।
অংশুমানের কথায় দীপাবলিতে সকলের বাড়ি আলোতে ভরে ওঠে। কিন্তু আলোর প্রদীপ যারা তৈরি করছে তাদেরই আর্থিক দুরাবস্থা। তাদের বাড়িও যাতে দারিদ্রতার অন্ধকার কাটিয়ে আলোক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দীপাবলিতে তাই তার এই চিন্তা ভাবনা। তার মতে সকলের উচিত চিনে তৈরি আলোর জিনিস ব্যবহার করা ছেড়ে দেশের মৃৎ-শিল্পীদের তৈরি প্রদীপ দিয়ে বাড়ি সাজানো দীপাবলিতে। এখন থেকেই দেশের জন্য সমাজের জন্য কাজ করতে চায় অংশুমান। ভবিষ্যতে ইচ্ছে ভারতীয় সেনাতে যাওয়ার। তার এই কাজে তাকে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে তার মা হেমলতা চক্রবর্তী।
অংশুমান চক্রবর্তী জানিয়েছে, চীনের তৈরি আলোর জিনিস ব্যবহার করা ছেড়ে আমাদের মাটির প্রতি ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেক বছর একই ধরনের প্রদীপ দেখি তাই এই বার আমি একটু অন্যরকম চিন্তা ভাবনা করি। সেই ভাবেই প্রদীপ গুলোকে রং করেছি।
অংশুমানের মা হেমলতা চক্রবর্তী বলেন, ছেলে চেয়েছিল করতে। আমি ওর দরকার অনুযায়ী পাশে থেকে সাহায্য করেছি। ছোট থেকে ও আর্ট এন্ড ক্রাফ্ট এবং অঙ্কন খুব ভালো করে। দীপাবলিতে যাতে মৃৎ-শিল্পীদের ঘরেও আলোতে ভরে যায়। তাই আমাদের এই উদ্যোগ।
কথাতেই আছে ছোট ছোট অনেক চিন্তা ভাবনা বদলে দিতে পারে সমাজকে। কেন্দ্র সরকার বারবার বার্তা দিচ্ছে যাতে আমরা স্থানীয় শিল্পীদের পাশে বা শিল্পের পাশে দাঁড়াই। "ভোকাল ফর লোকাল" ক্যাম্পেইন চলছে দেশ জুড়ে। আর সেই বার্তা দিতেই পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রের এই ধরনের চিন্তা ভাবনা সত্যি সাধুবাদ জানানোর মতো। তার এই উদ্যোগ, বার্তা দেওয়ার চেষ্টা অনুপ্রেরণা যোগাবে সকলকে।
অযোধ্যায় নরেন্দ্র মোদী, রামলালার মূর্তির সামনে আরতি করলেন প্রধানমন্ত্রী
ধনতেরাসে কেন সোনা কিনবেন? জানুন এই ধারনার পিছনে লুকিয়ে থাকা পৌরানিক গল্প