সংক্ষিপ্ত

২২টি ওয়ার্ডের বাঁশ বেড়িয়া পুরসভার তৃণমূলের কাছে একটি বড় সমস্যা গোষ্ঠী কোন্দল। গত পুরসভায় একচ্ছত্র ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। পেয়েছিল ১৭টি আসন। বাকি বিজেপিস সিপিএম ফরোয়ার্ড ব্লক ও নির্দল প্রার্থীরা একটি করে আসনে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু এবার দুর্ণীতি ও স্বজন পোষণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

রবিবার হুগলি (Hooghly) জেলার ১২টি পুরসভায় নির্বাচন (WB Municipal Elections 2022)। তার আগে একনজরে দেখে নিন এই জেলার ভোটচিত্র। একটা সময় হুগলিতে শক্তিশালী ছিল বামেরা। কিন্তু রাজ্যে পালাবাদলের পর রাশ আলগা হয়েছে বামেদের। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি শক্তিশালী রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করলেও বিধানসভা নির্বাচনে ততটা শক্তি প্রদর্শন করতে দেখা যায়নি। তাই এই পুরসভায় নির্বাচন অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের প্রথম সারির তিনটি রাজনৈতিক দলের কাছে। কারণ এই জেলাতেই সিঙ্গুর। যে সিঙ্গুর আন্দোলন করে বাম জামানার পতন ঘটিয়েছিল তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনের পর এই জেলায় পুরবোর্ডগুলি দখলের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রদর্শনের করতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। 

জেলার ভোট ছবিঃ
মোট পৌরসভা ১২ টি 
মোট পোলিং বুথ ১৩৯৪টি,
মোট ওয়ার্ডস ২৭০টি,
মোট পোলিং প্রেমিসেস ৫৪৭টি,
মোট সেক্টর ১০২টি,
মোট ভোটার্স  ১১২৭৮৩৫
পুরুষ ভোটার ৫৬৭৭৮৯
মহিলা ভোটার ৫৬০০৮
অন্যান্য ৩৮


বাঁশ বেড়িয়া- ২২টি ওয়ার্ডের বাঁশ বেড়িয়া পুরসভার তৃণমূলের কাছে একটি বড় সমস্যা গোষ্ঠী কোন্দল। গত পুরসভায় একচ্ছত্র ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। পেয়েছিল ১৭টি আসন। বাকি বিজেপিস সিপিএম ফরোয়ার্ড ব্লক ও নির্দল প্রার্থীরা একটি করে আসনে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু এবার দুর্ণীতি ও স্বজন পোষণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

হুগলী চুঁচুড়া- ৩০ ওয়ার্ডের এই পুরসভায় তৃণমূলের দলীয় সমস্যা বেগ দিতে পারে।দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে.... স্বপ্তগ্রাম বিধানসভার বিধায়ক তপন দাসগুপ্ত ও চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার এর বিতর্কিত মতামত একে অপরের বিরুদ্ধে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তপন দাসগুপ্ত র ভাই গোবিন্দ দাসগুপ্ত এবার টিকিট পায়নি। গত পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ২৫টি আসন। সিপিএম তিনটিতে জয়ী হয়েছিল। ফরোয়ার্ডব্লক ও নির্দল প্রার্থীরা একটি করে আসনে জিতেছিল। 

চাপদানি- ২২ ওয়ার্ডের চাপদানি পুরসভায় তৃণমূল পেয়েছিল ১৩টি আসন। কংগ্রেস। কংগ্রেস ও বিজেপি জয়ী হয়েছিল ২টি আসনে। আর সিপিএম জয়ী হয়েছিল ১টি আসনে। ৪টি আসন জিতেছিল নির্দল প্রার্থীরা। চলতি নির্বাচনে গোঁজ প্রার্থী তৃণমূলকে সমস্যায় ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ভদ্রেশ্বর- ২২ আসনের এই পুরসভায় দল বদল একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে শাসক দলের কাছে। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তী গত বিধানসভার আগে বিজেপি তে জয়েন করেছে 2জন কাউন্সিলার কে নিয়ে। গত  পুরসভা নির্বাচনে ১১টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। সিপিএম পেয়েছিল ৫টি আসন। 

বৈদ্যবাটি- ২৩ আসনের বৈদ্যবাটি পুরসভাচ গত নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ১৩টি আসন। কংগ্রেস, ফরোয়ার্ডব্লক ও নির্বাদল পেয়েছিল তিনটি করে আসন। তবে এবার তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক অরিন্দম গুইন  vs সুবীর ঘোষ, অজয় প্রতাপ সিং গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। তবে জেলা নেতৃত্ব তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। 

শ্রীরামপুর-  সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাক। তবে বর্তমানে দলে কিছুটা হলেও কোনঠাসা কল্যাণ। যাইহোক ২৯ আসনের এই পুরসভায় গতবারে তৃণমূল পেয়েছিল ২২টি আসন। চারটি পেয়েছিল সিপিএম।

রিষড়া- ২৩ ওয়ার্ডের পুরসভা গতবারে তৃণমূল পেয়েছিল ১৯টি আসন। কংগ্রেস ও সিপিএম একটি আসনে জয়ী হয়েছিল। আরামবাগের স্বামী অপরূপা পোদ্দারের স্বামী শাকির আলির দাপট রয়েছে। যা উস্কে দিচ্ছে গোষ্ঠী কোন্দলকেও। 


কোন্নগর- প্রাক্তন চেয়ারম্যান টিকিট না পাওয়ায় কংগ্রেস থেকে দাড়িয়েছে। এই মুহূর্তে ঘাসফুলের গোষ্ঠী কোন্দল চরমে, পৌরসভা ভোটে হুগলির অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র।কংগ্রেসের বেশ কিছু পোড় খাওয়া নেতা লড়াইয়ে আছে। ২০ ওয়ার্ডের পুরসভায় গতবারে তৃণমূল পেয়েছিল ১১টি আসন। 

উত্তরপাড়া কোতরং- টিকিট না পেয়ে প্রাক্তন চেয়ারম্যান পিনাকী ধামালী সহ ১২ জন তৃণমূল নির্দল এর হয়ে লড়বে। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রবল, বর্তমানের বিদায়ী চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব এর বিরুদ্ধে পরিবার তন্ত্রের ও অভিযোগ রয়েছে। ২৪ ওয়ার্ডের এই পুরসভায় তৃণমূলের দখলে ছিল ১৫টি আসন। সিপিএম ছিল  ৪টি আসন। কংগ্রেসের দখলে ২টি আসন ছিল। 

ডানকুনি- ২১ ওয়ার্ডের এই পুরসভা ১১টি দখল ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। সিপিএম পেয়েছিল ৮টি আসন। কংগ্রেসের ও নির্দল পেয়েছিল একটি করে আসন। 

তারকেশ্বর- গতবার অলআউট খেলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এই কেন্দ্রে ১৫টি আসনের ১৫টিতেই জয়ী হয়েছিল ঘাসফুল। এবার একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে পারবে কিনা সেটাই দেখার। 

আরামবাগ- এই পুরসভাতেও তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল । ১৯ আসনের সবকটিতেই জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। তবে বিধানসবা নির্বাচনে আরামবাদে বিজেপির প্রাধান্য দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। 

সবকটি কেন্দ্রেই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে। কিন্তু তাতেও তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না বলে দাবি তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নই তাদের হাতিয়ার বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। তবে এই জেলায় এবার বামেদের ভোট বাড়তে পারে বলেও মনে করেছে একাংশ।