সংক্ষিপ্ত

করোনা পরবর্তী স্কুল চালু হলেও অধিকাংশ ছাত্র স্কুলে আসছে না।  সহপাঠীদের ফেরাতে এবার পথে নামল সহপাঠীরাই, প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্থানীয় বিধায়ক সহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকও।

 

করোনা পরবর্তী স্কুল চালু হলেও অধিকাংশ ছাত্র ( Students) স্কুলে আসছে না। বেড়েছে ড্রপ আউটের সংখ্যা। স্কুলে না আসা সহপাঠীদের ফেরাতে এবার পথে নামল পড়ুয়ারাই, সঙ্গে রয়েছেন অবশ্যই শিক্ষকরাও।  উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার রামকৃষ্ণপুর পিডিজিএম হাইস্কুলের ( Ramkrishnapur High School ) ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা ক্লাস শেষে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে ঘুরে সহপাঠিদের  স্কুলে ফেরার আবেদন জানায়।  পড়ুয়াদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বিধায়ক সহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকও।

এদিন তাঁরা বলেন, ‘‘স্কুলছুটদের স্কুলমুখী করতে সহপাঠীদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’’ করোনা সংক্রমণের জেরে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর নবম থেকে দ্বাদশ এই চারটি শ্রেণির জন্য স্কুল খুলেছে। কিন্ত শুরু থেকেই জেলার বেশ কিছু স্কুলে উপস্থিতির হার খুবই কম। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারনে অপেক্ষাকৃত দুস্থ পরিবারের পড়ুয়ারাও সংসারের খরচ জোগাতে আয়ের সংস্থান করতে অন্যত্র কাজে নিয়োজিত হয়ে গিয়েছে। কেউবা ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ,  কেউবা আবার কোনও দোকানের কর্মচারী কিংবা কোনও ছাত্র হাটে বাজারে সবজি বিক্রেতার কাজে লেগে পড়েছেন। ফলে স্কুল খুললেও পেটের টানে তাদের রুজি রুটির সন্ধান থেকে ফিরে আসতে চাইছেনা। এদিকে স্কুল খোলার পর পড়ুয়াদের গরহাজিরা নিয়ে চিন্তা কাটেনি শিক্ষকদেরও। সেই তালিকায় রয়েছে জেলার চাকুলিয়া ব্লকের রামকৃষ্ণপুর পিডিজিএম হাই স্কুলও।

আরও পড়ুন, Narayan Debnath: 'বাঁটুল দ্য গ্রেট'-র স্রষ্ঠাকে দেখতে গেলেন ধনখড়, শিল্পীর চিকিৎসার খরচ রাজভবনের

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতর সূত্রে খবর, এই ব্লকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা মোট ১৭। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মিলে পড়ুয়ায় সংখ্যা প্রায় ১৩,০০০। বর্তমানে উপস্থিতির সংখ্যা গড়ে ১০ শতাংশের আশেপাশে।  রামকৃষ্ণপুর পিডিজিএম হাই স্কুল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার নবম ও দশম শ্রেণি মিলে মোট ৬৮৫ জন পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র ৮০-৮৫ জন উপস্থিত ছিল। স্কুলছুটদের ফেরাতে এ দিন শিক্ষকেরা ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে পড়ুয়াদের দুয়ারে দুয়ারে। করোনার জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের একাংশ বিভিন্ন কাজে লেগে পড়েছে। কেউ আবার রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে, কেউ ভিন্‌ রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছে। কেউ কেউ আবার জানিয়ে দিয়েছে কাজে লেগে পরায় বিদ্যালয়ে আসতে পারবে না।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকি দত্ত বলেন, ‘‘যারা কাজ করছে, আসছে না তাদের স্কুলে পড়ুয়ারাই সহপাঠীদের এমন উদ্যোগ নিয়েছে।’’ স্কুলের সহপাঠী ও শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলের ক্লাস শেষে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে স্কুলছুট পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। তাদের বাড়ি গিয়ে স্কুলছুট ছাত্র ও তাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলছেন। আবেদন জানাচ্ছেন স্কুলে এসে পঠন পাঠনের জন্য। স্কুলের সহপাঠীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় চাকুলিয়ার বিধায়ক মিনাজুল আরফিন আজাদ। স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে সহপাঠীদের এই উদ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসনীয়।  সাধুবাদ জানিয়েছেন থেকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকও।