সংক্ষিপ্ত
বঙ্গ বিজেপিতে সাংগঠনিক রদবদলের শেষে বড়সড় চমক। শুভেন্দু অধিকারী যদি রাজ্য সভাপতি হন, তাহলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হবেন কে, সুকান্ত মজুমদারই বা কোন পদে যাবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
বাংলায় বিজেপির পক্ষ থেকে রাজ্য সভাপতির পদে বসতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারীই। সুকান্ত মজুমদারকে দলের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরানো হবে বলেই দলীয় সূত্রে খবর। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই ঘোষণা হতে চলেছে পদ্ম শিবিরে। সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ার জন্য রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দেবেন শুভেন্দু অধিকারী। বঙ্গে নতুন বিরোধী দলনেতা করা হবে মনোজ টিগ্গাকে। অন্যদিকে, সুকান্ত মজুমদার কোন পদে যাবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা। সূত্র মারফৎ জানা গেছে যে, কেন্দ্রীয় সম্পাদক বা সংসদীয় দলের কোনও পদ দেওয়া হতে পারে সুকান্ত মজুমদারকে। এই বড়সড় সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে অতি সম্প্রতিই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গেরুয়া শিবিরের সূত্র বলছে, বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য সভাপতির পদে স্থান দেওয়ার বিষয়টা নিয়ে সর্বভারতীয় সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তবে, দলের পক্ষ থেকে এখনই অফিশিয়াল ঘোষণা নয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।
এখন সাধারণ দলীয় সমর্থকদের কৌতূহল হল, দিলীপ ঘোষকে কোন পদে রাখা হবে? জানা গেছে, আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ) চাইছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদেই ফিরিয়ে নিয়ে আসা হোক দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে হিন্দু সংগঠনের। আরএসএস নেতৃত্বের যুক্তি হল, দিলীপ ঘোষ আবার রাজ্য সভাপতি পদে ফিরে এলে বিজেপির অন্দরের আদি আর নব্যের ঝগড়া দূর হবে। কারণ, বাংলায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীও সর্বস্তরের আদি বিজেপি নেতাদের নিয়ে চলতে পারছেন না বলে দলীয় সূত্রে খবর। কিন্তু, আরেকদিকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে দিলীপ ঘোষ সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পদেই থাকুন। এমতাবস্থায়, বাড়তি দায়িত্ব হিসাবে অমিতাভ চক্রবর্তীর পদটি দিলীপকে দিয়ে দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিতাভ চক্রবর্তী আবার কোন পদে যাবেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা অব্যাহত।
বিজেপি সূত্রে খবর, দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই অনেকে বিরূপ মন্তব্য প্রকাশ করছেন। তাছাড়া, বেশ অনেকগুলি অভিযোগও জমা পড়ছে সুকান্তর নামে। তাঁকে ডেকে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও সেকথা জানিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের শুরুর দিকেই পশ্চিমবঙ্গে আসছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেখানে, দলের অন্দরে এই রদবদল ঘটিয়ে বিজেপির আসন বাড়ানো যায় কিনা, সেটাই পরীক্ষা করে দেখতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী বাংলার একাধিক জেলায় রাজনীতির লড়াই করে আসায় পশ্চিমবঙ্গে তাঁর পরিচিতি অনেকটা বেশি। সেই পরিচিতিকেই কাজে লাগাতে চাইছে গেরুয়া দল। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই, বিজেপির সদ্য ঘোষিত কোর কমিটিতে জায়গা না পেয়ে সুকান্ত মজুমদার ও অমিতাভ চক্রবর্তীকে ‘অযোগ্য’ নেতা বলে প্রকাশ্য ফেসবুক বার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
আরও পড়ুন-
চোখের নিচে সদ্য অস্ত্রোপচারের নীল রেখা, 'সেনাপতি' অভিষেকের সুস্থতার খবরে তৃণমূল শিবিরে উচ্ছ্বাসের ঢল
যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে বিরাট ট্রলি ট্রাকের ধাক্কা! মধ্যপ্রদেশে ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনায় যাত্রীদের মর্মান্তিক পরিণতি
দলের অন্দরেই নতুন আর পুরনোদের চাপা লড়াই! সুকান্ত বনাম সৌমিত্রর ক্ষোভ লুকোতে পারবে বঙ্গ বিজেপি?