সংক্ষিপ্ত

রাজ্যে ক্রমশঃ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে অ্যাডিনো ভাইরাস। শিশুরাই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের মৃত্যুও হচ্ছে। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করল বিরোধী দলগুলি।

রাজ্যে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একাধিক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, 'উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল, রাঢবঙ্গের বিভিন্ন অংশে চিকিৎসা পরিকাঠামো এতটাই দুর্বল যে এখানে এই সমস্ত রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। আপনি ভায়রোলজিস্ট খুঁজে পাবেন না। এই রোগের চিকিৎসা করতে গেলে ভায়রোলজিস্ট দরকার, এপিডেমোলজিস্ট দরকার। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দরকার যাঁরা এই সমস্ত রোগের চিকিৎসা করতে পারেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, কলকাতা থেকে যত দূরে যাবেন, এই সমস্ত ডাক্তারবাবুদের সংখ্যা কমতে থাকবে। স্বাভাবিকভাবেই ডাক্তারের অভাব হচ্ছে। রেফার হওয়াতে শিশুরা মারা যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। রাজ্য সরকার আরও একবার অপদার্থতার পরিচয় দিল। মুখ্যমন্ত্রীর বোঝা উচিত, নীল-সাদা বিল্ডিং তৈরি করলেই চিকিৎসার পরিকাঠামো তৈরি হয় না। নীল-সাদা বিল্ডিং তৈরি করে কিছু ডাক্তারকে দিয়ে দিলাম, এটাকে মেডিক্যাল কলেজ বলে না। হয় ধ্যান-ধারণা নেই, না হয় লোককে বোকা বানানোর চেষ্টা করেন। প্রতিবারই এভাবে কোনও না কোনও জ্বর আসে, মহামারী আসে, তাতে অনেক শিশুর মৃত্যু হয়।'

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এই ঘটনায় রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে বলেছেন, 'গতকালও আমি দেখেছি কলকাতায় খুবই বাড়ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। রাজ্য সরকার তথ্য গোপন করছে। হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, মৃত্যু বাড়ছে। সরকার সমস্ত কিছু চেপে যাচ্ছে। কোনও চিকিৎসা করাচ্ছে না। মানুষকে সচেতন করছে না, চিকিৎসা করাচ্ছে না, কিছুই করছে না। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে, গোপন করছে এই সরকার।'

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ইতিমধ্যেই অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি স্বাস্থ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের সময় স্বাস্থ্য দফতর যেভাবে কাজ করেছিল, এক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্য়বস্থা রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে স্বাস্থ্য দফতরের ব্যবস্থা নেওয়ার মধ্যেই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। বি সি রায় শিশু হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ফলে বাড়ছে উদ্বেগ। 

যে শিশুরা অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাচ্ছে। জ্বর কিছুতেই  কমছে না। অনেক শিশুর খিঁচুনিও হচ্ছে। এর ফলে সমস্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

আরও পড়ুন-

বিভাস অধিকারী থেকে অ্যডিনো ভাইরাস, তৃনমূলকে ঝাঁঝাল আক্রমণ দিলীপের

অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে তৎপর প্রশাসন, নোডাল অফিসার থেকে হেল্প সেল, একাধিক নির্দেশিকা স্বাস্থ্য দফতরের

'সুরক্ষা কবচ নিয়ে ব্যস্ত এখন তৃণমূল, তাই অবহেলিত শিশুরা' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দু-র