সংক্ষিপ্ত

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্কুলে শিক্ষক-অশিক্ষক পদে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ যেমন চাকরি বাতিল হচ্ছে, তেমনই দুর্নীতির অভিযোগে অনেকে গ্রেফতারও হচ্ছে।

সাধারণ অবস্থা থেকে অল্পদিনের মধ্যেই বিপুল সম্পত্তিরক অধিকারী। চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো জীবনযাত্রা। রাজ্য়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে, তাঁদের মধ্যে অনেকেরই কাহিনি একইরকম। নিয়োগ-দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্যায়ও মধ্যবিত্ত অবস্থা থেকে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী হয়ে উঠেছেন বলে দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। তদন্তকারীদের দাবি, সামান্য আয় থেকে কীভাবে এত সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠলেন ধৃত নেতা, এই প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। মুখ খুলছেন না শান্তনু। তিনি সম্পত্তি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন। শান্তনু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিশাল বাড়ি, রিসর্ট, ধাবা, গেস্ট হাউস আছে বলে অভিযোগ। হুগলির বিভিন্ন জায়গায় আছে হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনুর সম্পত্তি। প্রথম জীবনে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে কাজ করতেন এই তৃণমূল নেতা। সেখান থেকে তিনি কীভাবে এত সম্পত্তি করে ফেললেন? রহস্য উদঘাটনের চেষ্টায় তদন্তকারীরা।

হুগলির বলাগড়, চন্দননগর, চুঁচুঁড়া, জিরাট, চন্দননগরে শান্তনুর সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার পর রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমে চাকরি পান শান্তনু। তাঁর বেতন খুব বেশি ছিল না। সেই বেতনে এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়া সম্ভব নয়। অথচ ধৃত শাসক নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন প্রধান মানিক ভট্টাচার্যর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল শান্তনুর, এমনই অভিযোগ তদন্তকারীদের। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা করে নিতেন ধৃত শাসক নেতা। এই টাকাতেই এত সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছেন শান্তনু, দাবি ইডি আধিকারিকদের।

শান্তনু গ্রেফতার হয়েছেন শুক্রবার রাতে। তবে বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি তদন্তকারীদের নজরে ছিলেন। এর আগেও তাঁর বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। সেই সময় তাঁর আয়-ব্য়য় সংক্রান্ত তথ্য চান ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু শান্তনু যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। দুর্নীতির ফলেই ধৃত নেতা এত সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ।

শান্তনুর বিরুদ্ধে শুধু বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠাই নয়, ক্ষমতার আস্ফালনের অভিযোগও এনেছেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, বাউন্সার নিয়ে ঘুরতেন শান্তনু। তিনি অফিসে যাওয়ার সময়ও সঙ্গে বাউন্সার রাখতেন। স্থানীয়দের উপর চাপ সৃষ্টি করে জমি কিনে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ধৃত শাসক নেতার বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন-

শেওড়াফুলির বাজারে মাছ কাটছে 'কেষ্ট'! ভাইরাল ছবি ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

'তৃণমূল শাসকদল, বিজেপি-সিপিএম-কে বাবা ভাবছেন, ভুল করছেন' পুলিশকে হুঁশিয়ারি মদনের

নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যোগ নেই জামাইয়ের, চোখে জল নিয়ে শান্তনুকে 'ভাল মানুষ'-এর সার্টিফিকেট শাশুড়ির