সংক্ষিপ্ত

একই সঙ্গে বিশ্বভারতীতে যে চাকরির পরীক্ষা হয়, সেখানে কবিগুরুর মাতৃভাষা বাংলা ‘বাধ্যতামূলক’ নয় কেন, এই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখল বাংলা পক্ষ। 

বিশ্বভারতী, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের হাতে গড়ে তোলা শিক্ষাক্ষেত্র, সেখানেই চাকরি করার জন্য বাধ্যতামূলক ভাষা জানতে হয় হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষা। রবি ঠাকুরের নিজের মাতৃভাষা বাংলাই ঠাঁই পায়নি তাঁর নিজপ্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে। চমকপ্রদ ঘটনাটিকে ফের একবার জাগিয়ে তুলল ‘বাংলা পক্ষ’। বিশ্বভারতীতে চাকরির ক্ষেত্রে কেন বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক নয়? এই প্রশ্ন নিয়েই প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্বভারতীর আচার্য স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখল ‘বাংলা পক্ষ’।

এই সংগঠনের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন তোলা হয়, তেজপুর ইউনিভার্সিটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলেও সেখানে হিন্দি ভাষার কড়াকড়ি নেই। বাংলা ও আসাম দুটো অহিন্দি রাজ্য, মানে ক্যাটেগোরি সি স্টেট। তাহল বাংলা ও আসামের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম কেন? প্রতিবাদ করার পাশাপাশি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার গুরুত্বে জোর দিয়ে দাবির লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে দিল গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ‘বাংলা পক্ষ’।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জন্মতিথির আগে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন বাংলায় তথা খোদ বোলপুরে পদার্পণ করতে চলেছেন, তখন বঙ্গ সংস্কৃতির উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলা পক্ষের এই উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, শুধু বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করার দাবি নয়। এর পাশাপাশি, ‘মা দুর্গা’-কে অপমান করার অভিযোগ তুলে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন গর্গ চট্টোপাধ্যায়।

বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একাধিকবার বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সরব হয়েছেন বহু বিখ্যাত ব্যক্তিসমূহরা। এইরূপ বিতর্কিত মন্তব্যগুলির মধ্যে একটি ছিল মা দুর্গার পুজো করে ব্রিটিশদের জুতো চাটার প্রসঙ্গ। বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহে বসে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সকলের সামনেই বলেছিলেন যে, দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল ব্রিটিশদের জুতো চাটার জন্য এবং দুর্গাপুজো ছিল মদ এবং অন্যান্য জিনিস দিয়ে ব্রিটিশ সাহেবদের খুশি করার অজুহাত মাত্র। বলা বাহুল্য, এই মন্তব্য যেমনভাবে হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করে, তেমনভাবেই বাঙালির সংস্কৃতির ইতিহাসকেও ভয়ঙ্করভাবে বিকৃত করে। উপাচার্যের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে ‘মা দুর্গাকে অপমান করা’-র অভিযোগ তুলে কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম)-কে উদ্দেশ্য করে চেতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়।

‘মা দুর্গাকে অপমান করা’-র বিরুদ্ধে প্রথমে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে ৪৮ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছিল উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে। তিনি ক্ষমা না চাওয়ায় বাংলা পক্ষ-এর হয়ে এবার সরাসরি কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন গর্গ চট্টোপাধ্যায়। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, যেকোনও রকম আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাংলা পক্ষ। বাংলার মাটিতে বাঙালি কিংবা মা দুর্গাকে অপমান করার দুঃসাহস যাতে কারোর না হয়, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জমি কেড়ে নেওয়ার নোটিসের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছে বাংলা পক্ষ। বলা হয়েছে, বিশ্বভারতীকে ধ্বংস করতে নেমেছে বিজেপি-আর এস এসের দালাল বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বাঙালির গর্ব নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙতেও উদ্যত তিনি। আমরা চাই, বাঙালির ঘরে জন্মানো মীরজাফরের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিক কলকাতা পুলিশ।
 

 

আরও পড়ুন-

‘হার্ভার্ড-অক্সফোর্ডের বিচারপতি’-র কথা বলে কি প্রচ্ছন্নে ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কেই নিশানা করলেন কিরেন রিজিজু?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে আজই হতে পারে রুবি মেট্রোর শুভ সূচনা, জেনে নিন মেট্রোপথের বিস্তারিত তথ্য

স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি নীচে কলকাতার তাপমাত্রা, কেমন থাকবে বৃহস্পতিবারের আবহাওয়া?