সংক্ষিপ্ত

ভারতের আইনমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘হার্ভার্ড-অক্সফোর্ড থেকে শিক্ষিত হয়ে আসা ভারতীয় আইনজীবী, বিচারকদের উচিত নিজেদের ভারতীয় ভাবনাকে বিনয়ী রাখা’। 

মহারাষ্ট্র ও গোয়া বার কাউন্সিলের অনুষ্ঠানে এসে ভারতের আইনজীবী ও বর্তমান বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী তথা অরুণাচল প্রদেশের বিজেপি নেতা কিরেন রিজিজু। বিদেশ থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে আসা বিচারক এবং আইনজীবীদের ভারতীয় ভাষা এবং সংস্কৃতির বিষয়ে তাঁর মন্তব্য যে কার্যত ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিশানা করে নয়, এমন কথা অস্বীকার করতে পারবেন না কেউই। মুম্বইতে আয়োজিত বার কাউন্সিলের এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে কিরেন রিজিজু বলেন, ‘হার্ভার্ড-অক্সফোর্ড থেকে শিক্ষিত হয়ে আসা ভারতীয় আইনজীবী, বিচারকদের উচিত নিজেদের ভারতীয় ভাবনাকে বিনয়ী রাখা’।

হার্ভার্ড-অক্সফোর্ডের মতো বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেওয়ার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার ব্যবহার সম্পর্কেও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "ভারতের অনেক ভালো আইনজীবী এবং বিচারক, যাঁরা হার্ভার্ড এবং অক্সফোর্ডের মতো বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষিত হয়ে এসেছেন, তাঁরা ইংরেজিতে চিন্তাভাবনা করেন এবং কথা বলেন। তবে এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, তাঁদের বক্তব্যে ভিত্তি থাকতে হবে এবং তাদের চিন্তাধারা ’ভারতীয়' হতে হবে।" তিনি আরও বলেন, “অনেক আইনজীবী আছেন যাঁরা ইংরেজিতে চিন্তাভাবনা করেন এবং ইংরেজিতে কথা বলেন। কিন্তু আপনার যদি বিদেশী ভাষা এবং বিদেশী চিন্তা থাকে, তাহলে সেটা ঠিক নয়। আপনি হয়তো কোনও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন - হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড। আপনি একজন ভালো আইনজীবী হতে পারেন এবং আপনি একজন বিচারপতি হতে পারেন। কিন্তু আপনার চিন্তাধারা ভারতীয় রাখা উচিত, যাতে আপনি নম্র থাকেন।” 

বলা বাহুল্য, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান তথা দেশের ৫০ তম প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করে এসেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কেন্দ্রের বিজেপি দলের বিপক্ষে তাঁর সমলিঙ্গ বিবাহ, সবরিমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার, 'দ্য কেরালা স্টোরি' সিনেমার বাধাহীন মুক্তি সহ বেশ কতগুলি যুগান্তকারী রায় ভারতীয় সমাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে, যে বদলগুলি একেবারেই ভালো চোখে দেখেনি গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতার ‘বিদেশি’ সংস্কৃতি বা ‘বিদেশি’ ভাষা সংক্রান্ত তাঁকে উদ্দেশ করেই করা হল কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন অনেকেই। 

এদিনের মঞ্চ থেকে কিরেন রিজিজু আরও বলেন যে, যেসব ভারতীয় আইনজীবীরা ভারতের আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারেন, তাঁরা বেশি টাকা পারিশ্রমিক নেন। এই বিভেদ নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ তিনি। স্পষ্ট সুপ্রিম কোর্টের উদাহরণ টেনে তাঁর বক্তব্য, “সুপ্রীম কোর্টে কিছু আইনজীবী আছেন, যাঁরা নিজেদের আইনি জ্ঞান নির্বিশেষে, শুধুমাত্র ভালো ইংরেজি বলার কারণে বেশি বেতন পান। এটা ঠিক নয় যে, আপনি ভালো ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন বলে বেশি বেতন পাবেন। চিন্তা করুন, এমন অনেক আইনজীবী আছেন যাঁদের মারাঠি, হিন্দি ভাষায় ভালো দক্ষতা আছে। কিন্তু তাঁদের মাইনে কম হবে। কারণ, তাঁরা ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না। এই ধরনের প্রবণতা একটা জাতির জন্য মঙ্গলকর নয়।" 

আরও পড়ুন- 
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে আজই হতে পারে রুবি মেট্রোর শুভ সূচনা, জেনে নিন মেট্রোপথের বিস্তারিত তথ্য
স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি নীচে কলকাতার তাপমাত্রা, কেমন থাকবে বৃহস্পতিবারের আবহাওয়া?

মে মাসের শুরুতে কোন শহরে ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির দাম? দেখে নিন বৃহস্পতিবারের পেট্রোল-দর