সংক্ষিপ্ত

ট্রাফিক কিয়স্ক ভাঙচুর করে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে স্থানীয়রা। সপ্তাহের শেষ দিনে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শ্রীরামপুর এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে র‍্যাফ নামাতে হয় ঘটনাস্থলে।

 

রামনবমীর মিছিল ঘিরে হিংসার স্মৃতি এখনও মুছে যায়নি। এরই মধ্যে ফের উত্তপ্ত হুগলির শ্রীরামপুর। শনিবার এক পথচারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এলাকায়। উত্তেজিত জনতা রাস্তায় আগুন ধরিয়ে অবরোধ করেন। এখানেই শেষ নয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ট্র্যাফিক পুলিশের উপরও আছড়ে পড়ে উত্তেজিত জনতা। ট্রাফিক কিয়স্ক ভাঙচুর করে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে স্থানীয়রা। সপ্তাহের শেষ দিনে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শ্রীরামপুর এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে র‍্যাফ নামাতে হয় ঘটনাস্থলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে শনিবার শ্রীরামপুর পিয়ারাপুর মোরে দিল্লি রোডে এক সাইকেল আরোহী মহিলাকে পিষে দেয় একটি ডাম্পার। ঘটনার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। শুরু হয় পথ অবরোধ। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। মারধর করা হয় ট্র্যাফিক পুলিশকেও। জানা যাচ্ছে মৃতার নাম পুষ্পা সাঁতরা। বয়স ৫৬ বছর। ড় বেলু মনসাতলায় বাড়ি পুষ্পার। বেপরোয়া ডাম্পারের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলচে সাধারণ মানুষ। এমনকী পুলিসশের বিরুদ্ধে উঠছে টাকা তোলার অভিযোগও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনীও।

প্রসঙ্গত, রামনবমীকে কেন্দ্র করে অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছে বাংলায়ও। হাওড়া এবং রিষড়া জুড়ে চলেছে ভয়াবহ অস্থিরতা। সোমবার রাতভর অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি রিষড়া স্টেশনের কাছে। মঙ্গলবার সকালেও থমথমে হুগলি। ইতিমধ্যেই গোটা এলাকাকে মুড়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার চাঁদরে। সকাল থেকে দফায় দফায় টহল দিচ্ছে পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। এলাকায় জারি ১৪৪ ধারা। তবে গতরাতের দুঃস্বপ্ন এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছেন না শহরবাসী। মঙ্গলবার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হলেও সকাল থেকে দোকানপাট বিশেষ খুলতে দেখা যায়য়নি। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে সোমবার রাতে অশান্তির জেরে বন্ধ হয়ে যায় হাওড়া বর্ধমান রেল চলাচল। রাত ১টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ফলে বিপাকে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের।

রিষড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হল অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। প্রতিটি রেল গেটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাকা হয়েছে চন্দননগর পুলিশ, হুগলি গ্রামীণ পুলিশের পাশাপাশি হাওড়া সিটি পুলিশকেও। সকাল থেকেই বন্ধ দোকানপাট। স্থানীয় সূত্রে খবর পুলিশ আপাতত দোকান খুলত্তে বারণ করেছে। গোটা এলাকায় জারি ১৪৪ ধারা। এখানেই শেষ নয়, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রিষড়া জুড়ে। ইতিমধ্যেই অপরাধীদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, রিষড়ায় অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে বলেও জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। যদিও আতঙ্কা কাটছে না মানুষের মন থেকে। সোম বার রাতভর বোমাবাজির ঘটনার রেশ মঙ্গলবার সকালেও কাটছে না।