সংক্ষিপ্ত

বাঁকুড়া পুলিশের তরফে 'অঙ্কুর' প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে। তার আওতায় প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা।

প্রাথমিক স্কুলে আর নাকি শিক্ষকদের প্রয়োজন নেই। এবার থেকে প্রাথমিকে ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা! চমকে উঠলেন তো! ঠিক এই ঘোষণাই করেছে বাঁকুড়া পুলিশ। সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রাথমিক শিক্ষায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। বাঁকুড়া পুলিশের তরফে 'অঙ্কুর' প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে। তার আওতায় প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা।

বুধবার বাঁকুড়া পুলিশ এই 'অঙ্কুর' প্রকল্পের ঘোষণা করে। এক সাংবাদিক বৈঠকে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘প্রতিদিন স্কুল শেষের পর নির্ধারিক স্কুলগুলিতে ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। এজন্য জঙ্গলমহলের ৫টি থানা এলাকার ৫টি স্কুল ও অন্যান্য থানা এলাকায় ১২৪টি স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে চিহ্নিত করা হয়েছে’। অঙ্কুর নামে এই প্রকল্পের কথা জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠিও দিয়েছেন পুলিশ সুপার। চিহ্নিত করা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টারও। সেখানেই প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। নিয়োগ দুর্নীতি, মহার্ঘভাতার দাবিতে যেখানে উত্তাল রাজ্য, সেখানে বাঁকুড়ায় এই ধরণের বিতর্কিত পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অঙ্ক ও ইংরাজি পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। পুলিশের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছেন শিক্ষক থেকে শিক্ষাবিদরা। বিরোধীদের দাবি, শিক্ষাব্যবস্থা চালাতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বাঁকুড়ার সাংসদ তথা প্রখ্যাত চিকিৎসক সুভাষ সরকার বলেন, ‘সিভিক ভলান্টিয়াররা শিশুদের ইংরাজি আর অংক শেখাবে এটা একবিংশ শতকে বাংলার লজ্জা। এখানে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি চরমে, শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। সরকার শিক্ষাব্যবস্থা চালাতে না পারলে দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করুক’।

সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, ‘এমনিতেই স্কুল শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করেছে। অসংখ্য স্কুলে শিক্ষক নেই। বহু প্রাথমিক স্কুল রয়েছে যেখানে একজনই শিক্ষক রয়েছেন। আর এখন সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে লেখাপড়া? কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শিক্ষানীতি সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে তুলে দেওয়ার উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে সামিল হয়েছে তৃণমূলও।’

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বাঁকুড়া পুলিশের এ সংক্রান্ত সার্কুলার পোস্ট করেছেন তাঁর টুইটে। সঙ্গে তিনি লিখেছেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় চার লক্ষ পরীক্ষার্থী কমে গিয়েছে। তিরিশের কম পড়ুয়া আছে, এরকম ৮ হাজার ২০৭টি সরকারি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের সাপ্লিমেন্টারি ক্লাসে পড়ানো হবে।