তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ।

ইতিমধ্যেই মদ্যপানের একটি ভিডিও সামনে প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও এশিয়ানেট নিউজ বাংলা সেই ভিডিও যাচাই করেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, এটি কোনও নতুন ঘটনা নয়। বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।

অন্যদিকে, বীরভূমে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা কটাক্ষ করেছেন, পার্টি অফিসে বসে মদ্যপানই আসলে তৃণমূলের সংস্কৃতি। ভিডিওটি তৃণমূল কার্যালয়ে বসেই তুলেছেন আরেক ব্যক্তি। সূত্রের খবর, যিনি ভিডিও তুলেছেন, তিনি নিজেও একজন দলীয় কর্মী। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, টেবিলটিকে ঘিরে বসে আছেন কয়েকজন।

তাদের মধ্যে আবার রয়েছেন ময়ূরেশ্বর-২ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রমোদ রায়। টেবিলের উপর রয়েছে কিছু প্লাস্টিকের গ্লাস এবং যাতে মদ রয়েছে বলে অভিযোগ। সঙ্গে আবার কিছু প্লাস্টিকের জলের বোতলও রয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, এটি একদিনের ঘটনা নয়। বরং, প্রায়শই এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।

একটি সংবাদমাধ্যমকে কাজল শেখ জানিয়েছেন যে, “গত ২ বছর জেলায় কিছু না হলেও ইদানীং অসামাজিক কাজকর্ম চলছে। উল্লেখ্য, প্রায় দুবছর জেলে থাকার পর, গত সেপ্টেম্বর মাসেই মুক্তি পেয়েছেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। নাম না করে কি এবার তাঁর দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন দলের অন্দরে কেষ্ট-বিরোধী বলে পরিচিত কাজল?

তৃণমূলের অন্দরে কার্যত, দুই নেতার যেন ঠান্ডা যুদ্ধ কি আরও একবার প্রকাশ্যে নিয়ে এল তাঁর এই মন্তব্য? কাজলের কথায়, “দুবছর বীরভূম জেলায় কোনওরকম অসামাজিক কাজকর্ম হয়নি। গত ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। কিন্তু একজন মানুষেরও প্রাণ যায়নি। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট হয়েছে। কোনও হানাহানি হয়নি। কিন্তু ইদানীং কিছু অসামাজিক কাজ হচ্ছে। কেন হচ্ছে? তা বলতে পারব না।”

প্রসঙ্গত, কেষ্টর জামিনের খবর প্রকাশিত হতেই বীরভূমে দলীয় কার্যালয় সাজানো হয়েছিল তাঁর ছবিতে। প্রকাশ্যে সেই কাজের সমালোচনা করেছিলেন কাজল। বীরভূমে অনুব্রত ফিরলে দলের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেছিলেন। কিন্তু সেই তালিকায় ছিলেন না কাজল। পরে দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাদের ঘনিষ্ঠরা দাবি করেছিলেন, সেই বৈঠকে কোনও রাজনৈতিক কথা হয়নি।

এমনকি, বিজয়া সম্মিলনীতেও দুই নেতাকে এক মঞ্চে দেখা যায়নি। দলের কোনও কর্মসূচিতে তারা একসঙ্গে থাকেননি। কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন উদ্যাপনেও ভিন্ন মঞ্চে ছিলেন জেলার তৃণমূল সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি। দুজনই নেত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন। যদিও তারা দলীয় কর্মীদের বারবার বার্তা দিয়েছেন যে, বীরভূম তৃণমূলে কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই।

যদিও বিরোধী বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে। তাদের অভিযোগ, শাসকদলের নেতারা এখন দলীয় কার্যালয়কে পার্টি করার জায়গায় পরিণত করেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব জানিয়েছেন, “তৃণমূলের এটাই কালচার। মানুষের উপকার তারা কী করে করবেন? নিজেরা উপকার নিতেই ব্যস্ত। প্রত্যেক পার্টি অফিসে আসলে দুষ্কৃতীদের ঠাঁই হয়েছে।”

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।