কেন পোড়ামুখ দুর্গাই পুজিত হন ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য বাড়িতে? দেখলে গায়ে কাঁটা দেবে!

Black Face Durga : ক্যানিং-এ ভট্টাচার্য বাড়ির ৪৪১ বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো আজও চলে আসছে পোড়ামুখ দুর্গার প্রতিমা নিয়েই। অগ্নিকাণ্ডের পর স্বপ্নাদেশে শুরু হয় এই অনন্য রীতি, যেখানে বাঁদিকে গণেশ এবং ফল বলির মধ্যেই টিকে আছে বনেদিয়ানার ছাপ।

Share this Video

Black Face Durga : দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো আজও দর্শকদের টানে অনন্য রূপে। এখানে দেবী দুর্গা পূজিত হন পোড়ামুখ প্রতিমা রূপে। ৪৪১ বছরের পুরনো এই পুজো ঘিরে রয়েছে অগ্নিকাণ্ড, স্বপ্নাদেশ আর বনেদিয়ানার এক আলাদা কাহিনি।

পরিবারের সদস্যদের বর্ণনায় জানা যায়, প্রায় শতাধিক বছর আগে দুর্গাদালানে ভয়াবহ আগুন লাগে। সেই অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয় মাতৃমন্দির ও প্রতিমা। এরপর ভট্টাচার্য বাড়ির তৎকালীন গৃহকর্তা রামকান্ত ভট্টাচার্য স্বপ্নাদেশ পান যে, দেবীকে কখনোই পূজা বন্ধ করা যাবে না, তাঁর পোড়ামুখ রূপেই পূজা করতে হবে। সেই থেকে আজও এই বাড়িতে পূজিত হন ঝলসানো তাম্রবর্ণের দুর্গা।

এই বাড়ির পুজোয় রয়েছে আরও এক বিশেষত্ব। সাবেকি নিয়ম ভেঙে এখানে গণেশ বসেন দুর্গার বাঁ পাশে, কার্ত্তিক থাকেন ডানদিকে। পরিবারের সদস্যদের মতে, পুরাণকথা অনুযায়ী গণেশ তাঁর মাকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড মনে করে প্রদক্ষিণ করেছিলেন। সেই বিশ্বাস থেকেই প্রথা বদলে গিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্মে।

আগে মহিষ বলি হলেও বর্তমানে হয় ফল বলি। জন্মাষ্টমী তিথিতে কাঠামো পুজোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই ঐতিহ্যবাহী দুর্গোৎসব। যদিও আজকের দিনে জাঁকজমক কিছুটা কমেছে, তবু বনেদিয়ানায় ভাঁটা পড়েনি। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকেও বহু ভক্ত আসেন এই প্রতিমা দর্শনে।

ভট্টাচার্য পরিবারের নতুন প্রজন্ম পল্লবী ভট্টাচার্যের কথায়, “পুজোর চারটে দিন চোখের পলকে কেটে যায়। বাড়ি ভরে ওঠে আত্মীয়, স্বজন আর আনন্দে। তাই দশমীর পরই বাইরে ঠাকুর দেখতে যাওয়া হয়।”

বাংলাদেশের বিক্রমপুর থেকে শুরু হওয়া এই পূজা আজও ক্যানিংয়ে টিকে আছে তার অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে, যা মনে করিয়ে দেয় ঐতিহ্য, বিশ্বাস আর পরিবারের আত্মিক বন্ধনের কাহিনি।

Related Video