সংক্ষিপ্ত

বাম আমলের নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। হাতে এসেছে তথ্য প্রমাণ, তেমনই আরও প্রমান খুঁজবে তাঁর সরকার, বললেন ব্রাত্য বসু।

 

বাম আমলে চিরকুটে লিখেই নিয়োগ হত- একাধিক জনসভায় তেমনই অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই 'চিরকূট' খোঁজার কাজই শুরু হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নি বলেন, বামফ্রন্টের শাসনকালে একটি কলেজে সিপিআই(এম) নেতার আত্মীয়ের নিয়োগের বিষয়ে কিছু অসঙ্গতি পেয়েছেন। এজাতীয় আরও প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। স্কুল ও কলেজগুলিকে খোঁজ করা হচ্ছে এজাতীয় দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে প্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাম আমলে শুধুমাত্র একটি চিট বা চিরকুটের মাধ্যেই হয়েছিল।

সাংবাদিক সম্মলেন ব্রাত্য বসু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকাল ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরথেকরে ১২ বছর ধরে এই সরকার এই বিষয়ে কোনও বিষদ বিবরণ প্রকাশ করেনি। কিন্তু যখন শুধুমাত্র পুরো তৃণমূল দলকেই দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে অপমান করা হচ্ছে তখন আর হাত গুটিয়ে বসে থাকা সম্ভব নয়। সেই জন্য এখন পুরনো সমস্ত দুর্নীতি খুঁজে বার করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন তিনি সমস্ত তথ্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দ্রুত পাঠিয়ে দেবেন।

ব্রাত্য বসু বলেন, ১৯৮৭ সালে সিপিআই(এম) নেতার স্ত্রীর নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। কিছু অসঙ্গতি তাঁরা পেয়েছেন। যাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল ২০২০ সালে তিনি অবসর নিয়েছেন। ব্রাত্য বসু বলেন, লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষার কোনও প্রমাণ তারা পাননি। তাই স্বভাবই প্রশ্ন উঠছে কী করে নিয়োগ করা হয়েছিল সিপিআই(এম) নেতার আত্মীয়কে? ব্রাত্য বসু বলেন 'আমরা প্রতিশোধ নয় পরিবর্তনের স্লোগান দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলাম। আর সেই কারণেই এজাতীয় বিষয়ে কোনও কাজ করিনি।' তিনি আরও বলেন, এখন সময় এসেগেছে সিপিআই(এম) মুখোশ খুলে ফেলার।

ব্রাত্য বসু বলেন, তাঁর সরকার এমন কোনও মানুষের জন্য কোনও পদক্ষেপ করবে না যাদের কোনও দোষ নেই। আর সেই কারণেই শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও বলেন, আদালতেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে। তিনি আরও বলেন, সিপিআই(এম)এর প্রতিটি পরিবারেই একজন করে রাজ্য সরকারি কর্মী রয়েছেন। যারমধ্যে শিক্ষক রয়েছে। আবার অক্ষিক কর্মীও রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ৩৪ বছরের বাম জমানায় শিক্ষক বা অক্ষিক চাকরিতে নিয়ম ভাঙার অভিযোগে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে। তারপরই এই বিষয়ে আদালতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ব্রাত্য বসু আরও অভিযোগ করেন সিপিআই (এম) কলেজ সার্ভিস কমিশনকে কখনই সঠিকভাবে ব্যবহার করেননি। যা সঠিকভাবে কার্যকর করছে তৃণমূল সরকার। তিনি আরও বলেন আইনের প্রতি তৃণমূলের শ্রদ্ধা রয়েছে। তিনি জানিয়ে দেন স্কুল সার্ভিস কমিশন, টেট - সহ একাধিক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের প্রতি দলের কোনও রকম সহানুভুতি নেই। আইন আইনের পথে চলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ব্রাত্য বসু বলেন, একজন মন্ত্রী হিসেবে তিনি চান যোগ্য প্রার্থীরাই চাকরি পাক। তাঁর দলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকুক বা না থাকুক। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল- প্রতিটি প্রার্থীর তিনি শিক্ষামন্ত্রী। যদিও আগে তিনি বলেছিলেন শুধুমাত্র দলের কর্মীদেরই তিনি কোটার চাকরি দিতে চান।

যদিও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ব্রাত্য বসুর দাবি অত্যান্ত দুর্বল। নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূল নেতারা কোনঠাসা। আর সেই দিক থেকে নজর ঘোরাতেই এজাতীয় অপপ্রচার করা হচ্ছে। তবে ব্রাত্য বসুর দাবি বা অভিযোগ কোনওটাই ধোপে টিকবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।