সংক্ষিপ্ত

উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮৩ নম্বর পেয়ে মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়েছে প্রীতম। তাঁর স্বপ্ন আইপিএস অফিসার হওয়া। এবার সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিয়ে চায় সে।

সে রাতের দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়ায় তাঁদের। সুখের গোটা পরিবার তছনছ হয়ে দিয়েছিল সেদিন। ২০১৯ সালে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল সন্দেশখালির একটা পরিবারের ভবিষ্যত। প্রদীপ মন্ডলের দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল সন্দেশখালিতে। কিন্তু এলাকার ত্রাস শেখ শাহজাহানের দলের একটা বুলেটে শেষ হয়ে যায় প্রদীপ মন্ডলের জীবন।

তারপর আর দুই ছেলেকে নিয়ে সন্দেশখালিতে থাকতে সাহস পাননি প্রদীপের স্ত্রী পদ্মা মন্ডল। দুই ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন পদ্মা। বড় ছেলে প্রীতম এবার উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছিল। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র সে। উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮৩ নম্বর পেয়ে মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়েছে প্রীতম। তাঁর স্বপ্ন আইপিএস অফিসার হওয়া। এবার সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিয়ে চায় সে।

প্রীতমের মা বলেন, ‘ওঁর বাবা চাইতো দুই ছেলে ভালো কিছু করুন। প্রীতম আজ এত ভালো রেজাল্ট করেছে। ওঁর বাবা যদি থাকতো তাহলে ভীষণ খুশি হতো’। পদ্মা জানান, গ্রামে তাঁদের কিছু জমিজমা এবং ভেড়ি রয়েছে। সেগুলি লিজে নেওয়া। সেগুলো দেখাশোনার জন্য মাঝেমধ্যে গ্রামে যেতে হয়। তবে নিয়মিত সন্দেশখালি যান না। সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এখনও কয়েকজন গ্রামে আছেন। তাই আতঙ্ক তো একটা রয়েছেই, জানান প্রদীপের স্ত্রী।

উচ্চমাধ্যমিকে অভাবনীয় সাফল্যের পর প্রীতমের লক্ষ্য আইপিএস অফিসার হওয়া। এখন থেকেই ইউপিএসসির জন্য পড়াশোনা শুরু করে দিতে চায় সে। সেই কারণে ছেলেকে দিল্লি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান পদ্মা। বিগত প্রায় দু’বছর ধরে গ্রামছাড়া। সন্দেশখালিতে ফেরার কথা কি ভাবছেন? প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রদীপের স্ত্রীকে। জবাবে বলেন, ‘অভিযুক্তরা এখনও বাইরে। তাই এখনই সেখানে পাকাপাকিভাবে ফেরার কোনও প্রশ্ন নেই’।

প্রীতমের মা পদ্মা বলেন, ‘২০২১ সালে বাড়িতে হামলা করা হয়। সব কিছু লুটপাট করে নেওয়া হয়েছিল’। সেই বছরই ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সন্দেশখালি ছাড়ার কথা ঠিক করেন। দুই ছেলের হাত ধরে গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।