সংক্ষিপ্ত
এলাকার মানুষের রামের প্রতি এতটাই ভালোবাসা যে গ্রামে কোনও নবজাতকের জন্ম হলে তার নামও রাখা হয় রামের নামে। সেই ঐতিহ্য আজও আড়াইশ বছর ধরে চলছে।
পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে এই অনন্য গ্রাম। এই গ্রামের প্রতি পুরুষের নাম রামের নামে। এখানে রামের প্রতি এমন আবেগ যে সর্বত্রই শুধু রাম। বাঁকুড়া জেলায় গ্রামের একটি এলাকার নাম রামপদ। রামও রামপদবাসীর পারিবারিক দেবতা। রামপদে একটি রামের মন্দির আছে, যেখানে মানুষ বছরের পর বছর ধরে তার পূজা করে আসছে। শুধু তাই নয়, এলাকার মানুষের রামের প্রতি এতটাই ভালোবাসা যে গ্রামে কোনও নবজাতকের জন্ম হলে তার নামও রাখা হয় রামের নামে। সেই ঐতিহ্য আজও আড়াইশ বছর ধরে চলছে।
বাঁকুড়ার পশ্চিম সানাবাঁধ গ্রামের রামপাড়া। রাম এই গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে থেকেই এই রামপাড়া এলাকার মানুষের প্রধান দেবতা রাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারের এক পূর্বপুরুষ স্বপ্নে রামকে ভগবান দেখেছিলেন। এরপর তিনিই গ্রামে রাম মন্দির নির্মাণ করেন।
রাম গ্রামের মানুষের জীবনের সঙ্গে যুক্ত
গত আড়াইশ বছর ধরে ওই রাম মন্দিরে রামের নামে শালিগ্রাম শিলার পূজা করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে শুধু রাম মন্দির বা রাম সেবাই নয়, পশ্চিম সনবান্ধ গ্রামের রামপদে গত আড়াইশ বছর ধরে সব নবজাত শিশুর নাম রাখা হয় রাম।
গত ২৫০ বছরে, রামপাড়ায় জন্মগ্রহণকারী প্রতিটি পুরুষের নাম রাম রাখা হয়েছে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আজ পর্যন্ত সেই নামের পুনরাবৃত্তি হয়নি। একইভাবে এলাকায় রামের নাম ছাড়া কোনও মানুষ নেই। এখন যখন অযোধ্যায় তাদের কুল দেবতার এত বড় মন্দির তৈরি হচ্ছে এবং রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, তখন রামপাড়ার মানুষ খুব উচ্ছ্বসিত।
প্রতিটি নবজাতকের নাম রাখা হয় রামের নামে-
এখন অযোধ্যায় রাম মন্দির স্থাপিত হওয়ায় রামপাড়ার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। অযোধ্যায় রামের অভিষেক দিবসে ২২ জানুয়ারী একটি বিশেষ পুজোর আয়োজন করেছে গ্রামের মানুষ। রামপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা রামকানাই মুখোপাধ্যায় বলেন, কারও নাম রামকানাই, রামকান্ত, রামদুলাল, রামকৃষ্ণ, এভাবে সবার নাম রাম। গুরুদেব আমাদের সন্তানদের নাম নির্ধারণ করেছেন এবং নবজাতকের নাম শুধুমাত্র রামের নামে রাখা হয়েছে।