সংক্ষিপ্ত
গোটা ঘটনাকে পুলিশের চূড়ান্ত ব্যর্থতার ফল বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি।
শনিবার ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। কিশোরী হত্যার প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। টায়ার জ্বালিয়ে, দোকানপাট ভাঙচুর করতে থাকে উন্মত্ত জনতা। ফের চলে পুলিশের সঙ্গে আরও একদফা হাতাহাতি। চলে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়াও। অন্যদিকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিজেপির প্রতিনিধি দল। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এদিন সাহেবঘাটা পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, ইংরেজ বাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী-সহ বিজেপির একাধিক রাজ্য প্রতিনিধি দল। গোটা ঘটনাকে পুলিশের চূড়ান্ত ব্যর্থতার ফল বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি।
শনিবার সাহেবঘাটা পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তাঁর দাবি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাকে লঘু করার জন্য আত্মহত্যার রূপ দিতে চাইছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন,'পুলিশ গোটা ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই তাই করছে।' তিনি আরও বলেন,'কালকে সন্ধ্যে পর্যন্ত কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি এসইউভি গাড়ি পাঠিয়ে তৃণমূলের নেতাদের তুলে নিয়ে গিয়েছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উপর থেকে নির্দেশ আছে।' পুলিশের দেওয়া আত্মহত্যার তত্ত্ব প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন,'ময়নাতদন্তের আগেই এসপি বলে দিচ্ছেন মেয়েটি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। জঙ্গলে বিষের শিশি দাঁড়িয়ে আছে, পড়ে যায়নি, দেখলেই বোঝা যাচ্ছে কেউ আলতো করে রেখে দিয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে চার জোড়া জুতো পাওয়া গিয়েছে। এই জুতো কার সেবিষয় পুলিশ কিছু জানাচ্ছে না। মেয়েটি কি আত্মহত্যা করতে যাওয়ার সময় সঙ্গে করে জুতো নিয়ে গিয়েছিল? এই ঘটনাগুলো বারবার প্রমাণ করছে এটি আত্মহত্যা নয় খুন।'
শনিবার চোপড়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেও পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে দুষলেন সুকান্ত। তাঁর দাবি চোপড়ায়ও একই ধাঁচে আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন এক রাজবংশী মেয়ে। সেক্ষেত্রেও আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করেছিল পুলিশ। একই ধাঁচে বারবার অপরাধ সংগঠিত হওয়া সত্ত্বেও ঠিকভাবে তদন্ত করছে না পুলিশ। এখানেই শেষ নয় প্রতিটি ঘটনা ধামাচাপা দেওয়াতে কালিয়াগঞ্জের আইসির ভূমিকা আছে বলেও দাবি করেন তিনি। অবিলম্বে আইসি এবং গ্রামের প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্তেরও দাবি তোলেন সুকান্ত।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা গ্রামের বাসিন্দা কিশোরী। এলাকারই এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে নাবালিকা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হন। সেখানেই তারা জানতে পারে নাবালিকা তার প্রেমিকের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় কিশোরীর নিথর দেহ।
আরও পড়ুন -
রাজবংশী নাবালিকা ধর্ষণ ও খুন ঘিরে রণক্ষেত্র কালিয়াগঞ্জ, পুলিশের ভূমিকার নিন্দা বিজেপি
ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক ডামাডোল, বাঁকুড়ার রাইপুরে বাড়ছে অস্বস্তি
ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কলকাতার মেটিয়াবুরুজ, আহতদের দেখতে হাসপাতালে ফিরহাদ হাকিম