সংক্ষিপ্ত

রাজবংশী নাবালিকার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রণক্ষেত্র কালিয়াগঞ্জ। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি স্থানীয়দের। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির।

 

উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। দোষীর শাস্তির দাবিতে পথে সাধারণ মানুষ। উত্তাল গোটা এলাকা। পুলিশের সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবার ও পরিজনদের হাতাহাতি ও বচসা বাধা। পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার। অন্যদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।

নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ

স্থানীয় সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা গ্রামের বাসিন্দা কিশোরী। এলাকারই এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে নাবালিকা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হন। সেখানেই তারা জানতে পারে নাবালিকা তার প্রেমিকের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় কিশোরীর নিথর দেহ।

পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি

নাবালিকার দেহ ঘিরে রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তারপরই পুলিশের সঙ্গে খণ্ড যুদ্ধ বেঁধে যায়। দেহ উদ্ধারে বাধা দেয় স্থানীয়রা। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি ছিল আগে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা। কিন্তু পুলিশ জোর করে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠাতে চাইলে এলাকা রণক্ষেত্রের আকার নয়। স্থানীয়রা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশেকে লক্ষ্য করে ইঁট ছোঁড়া হয়। পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালান হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশ প্রথমে ইট ছুঁড়েছে। তবে পুলিশ ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জ করে। হবেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। দীর্ঘক্ষণ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এই ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।

রাজনৈতিক তরজা

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন,উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে আরেক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে। মেয়েটি রাজবংশী (এসসি) সম্প্রদায়ের। পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে পরিবারের সদস্যদের মারধর ও চাপ দিচ্ছে। এই ঘটনা লজ্জার বলেও টুইট করেন তিনি।

 

 

শুভেন্দু অধিকারীও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। বলেছেন, আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কাটিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোক পরে রাজবংশী সম্প্রদায়ের নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটল- রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি খুব খারাপ। শুভেন্দু আরও বলেন, পুলিশ এখন ভাইপোর নবজোয়ার কর্মসূচির জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে। যার মূল্য চোকাতে হচ্ছে রাজ্যের সাধারণ মানুষকে।

পাল্টা কুণাল ঘোষ বলেছেন, উত্তর প্রদেশের ঘটনা চোখে পড়ে না। তিনি আকও বলেন, সেখানে ধর্ষণে অভিযুক্তরা অসহায় নাবালিকাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করছে। কিন্তু তা নিয়ে বিবৃতি নেই। তিনি আরও বলেন কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টই বলছে পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ করে কলকাতা সবথেকে বেশি নিরাপদ। তবে কালিয়াগঞ্জের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন, পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।