সংক্ষিপ্ত
মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তারা। কাজ করার মতো মানসিক পরিস্থিতিই নাকি নেই কারও। জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে তাই এবার গণইস্তফা দিলেন কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের ৭৭ জন সিনিয়র ডাক্তার।
মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তারা। কাজ করার মতো মানসিক পরিস্থিতিই নাকি নেই কারও। জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে তাই এবার গণইস্তফা দিলেন কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের ৭৭ জন সিনিয়র ডাক্তার।
রবিবার, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারকে ইমেইল করে সেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন তারা। সেই ইস্তফাপত্রে মোট ৭৭ জনের স্বাক্ষর রয়েছে। তারা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে তারা আর কাজ করবেন না।
সেই ইস্তফাপত্রে ডাক্তারেরা লিখেছেন, গত ৯ অগাস্ট আরজি করে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবাদে বিচার চেয়ে এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ১০ দফা দাবিতে জুনিয়র ডাক্তাররা আমরণ অনশনে বসেছেন। এমনকি, তাদের দাবিগুলি সাধারণ মানুষের উপকারের জন্যই। অনশনরত জুনিয়রদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে ক্রমশ। ওদের এই ভোগান্তি, এই যন্ত্রণা আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। এই পরিস্থিতিতে কাজ করার মতো মানসিক অবস্থাই নেই আমাদের কারও। জোর করে কাজ করলে আমাদের কাজে ভুল হতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীদের জীবনসঙ্কট তৈরি হতে পারে। তাই আমরা গণইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা সোমবার থেকে কার্যকরী হবে।”
কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার কৌস্তভ চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “গোটা রাজ্যজুড়ে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যে থ্রেট কালচার চলছে, তার অন্যতম ভয়ঙ্কর রূপ হল কল্যাণী জেএনএম। বেশ কয়েকজনকে অপসারণ করার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। এই থ্রেট কালচারের সিন্ডিকেটের যারা মূল মাথা, রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আমরা রাজ্য সরকারকে গণইস্তফার মধ্যে দিয়ে একটি বার্তা দিতে চাইছি। আলাপনবাবু যেভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন, সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে আমরা এই ইস্তফা দিয়েছি। আমরা ওদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, সরকারি হাসপাতালে চাকরি না করলেও ডাক্তাররা না খেয়ে মরবেন না।”
আইএমএ পশ্চিমবঙ্গ শাখার যুগ্ম সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্যর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় শব্দচয়নে যে কদর্যতার পরিচয় দিয়েছেন, তা নিন্দনীয়। ওনার কাছে থেকে এই ধরনের ভাষা আমরা আশা করি না। উনি যে পদ্ধতিগত ইস্তফার কথা বলেছেন, সেই বিষয়ে উনি যদি আমাদের একটি নির্দিষ্ট প্রোফর্মা তৈরি করে দেন, তাহলে আমরা সেই অনুযায়ী একে একে সই করে ইস্তফা দেব।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারি ক্ষেত্রে ৩৫০ জন এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে আরও ৪০০ জন ডাক্তার ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ অগ্নুৎপাতের মতো বিস্ফারিত হচ্ছে। রাজ্য সরকার চিকিৎসকদের প্রতি যে অসংবেদনশীল আচরণ করছে, তার পরিবর্তন না হলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য সরকার তৈরি থাকুক।”
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।