সংক্ষিপ্ত

সাত বছর আগে পরীক্ষা দিয়েও আজও চাকরি পাননি প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক। হাইকোর্টের নির্দেশে অবশেষে তাদের নিয়োগের সম্ভাবনা। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে তারা যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তার হিসেব কী?

টানা সাত বছর লড়াইয়ের পরে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরির ভাগ্য খুলতে চলেছে শিক্ষকদের। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আপার প্রাইমারিতে চাকরি পেতে চলেছেন প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক। পুজোর আগেই হতে পারে তাদের নিয়োগ। কিন্তু এই সাত সাতটি বছর তাদের চাকরি জীবন থেকে মুখে গেছে। সেই হিসেব নিকেশ করতে বসতে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে এই শিক্ষকদের। পাল্টা লাভের খতিয়ান বেড়েছে রাজ্য সরকারের ভাণ্ডাবে।

আপার প্রাইমারির এই পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৫ সালে। পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী। পাশ করেছিলেন ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৬৬০ পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে প্রশিক্ষিত ছিলেন ১ লক্ষ ৮ হাজার ৩৮০ জন। মেধাতালিকা প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর। ২০২০ সালে ১১ ডিসেম্বর সেই তালিকা বাতিল হয়ে যায়। হাইকোর্টে মামলা হয়। ০২১ সালে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ করতে বলে কলকাতা হাইকোর্ট। ৪ জানুয়ারি ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইন ভেরিফিকেশন চলে। ওই বছরেই ২১ জুন ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ পায়। তাতে নাম ছিল ১৪ হাজার ৫২ জনের। কিন্তু পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তাঁদের তালিকায় নেই। তাঁরা ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তখন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দেয়, যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের গ্রিভেন্স নাও। পরবর্তী কালে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয়, কিন্তু গ্রিভেন্স নেওয়ার নির্দেশ বহাল রাখে। ২০২৩ সালের ১৬ অগস্ট আবার মেধাতালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাতে ১৩ হাজার ৩৩৩ জনের নাম থাকে। ১৭ সেপ্টেম্বর আবার কাউন্সিলিং হয়। সেই কাউন্সিলিংয়ের পর ডাক পান ৮ হাজার ৯৪৫ জন পরীক্ষার্থী। কিন্তু বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ২০২১ সালের ২১ জুন যে ১৪ হাজার ৫২ জনের ইন্টারভিউ হয়েছিল, তাঁদের চাকরি দিতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের সম্প্রতি নির্দেশে চাকরি পাচ্ছেন প্রায় ১৪ হাজার।

কিন্তু এই সাত বছর চাকরি প্রার্থীরা তাদের ন্যায্য দাবিতে সরব হয়ে আদালত আর কলকাতার আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে নিজেদের পায়ের চটি খইয়ে ফেলেছেন। এতে তারা নিজের গ্যাঁটের কড়ি যেমন খচর করেছেন, তেমনই বঞ্চিত হয়েছেন নিজেদের প্রাপ্ত বেতন থেকে। চাকরি প্রার্থীদের হিসেব অনুযায়ী, একএক জন যোগ্য প্রার্থী এই চাট বছরে বঞ্চিত হলেন প্রায় ৩৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা থেকে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাঁচাতে পারল প্রায় ৫ কোটি টাকা।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।