সংক্ষিপ্ত
তিনি বলেন, “এক বছর আগেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, এখন হোক বা পরবর্তীকালে, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে লেনদেনের ব্যবস্থা একদিন ভেঙে পড়বেই।”
ক্রিপ্টোকারেন্সি একেবারেই ভরসাযোগ্য নয়, বলছেন খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ। ভারত সরকারের ক্রিপ্টোকারেন্সি্র উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে সমর্থন জানিয়ে শক্তিকান্ত দাশ বলেছেন, “এটা স্রেফ জুয়া খেলা ছাড়া আর কিচ্ছু না। এগুলোর আসলে কোনও মূল্যই নেই”। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনে যে ভারতীয় ডিজিটাল মুদ্রা চালু করা হচ্ছে, তা-ই বরং ক্রিপ্টোকারেন্সির চেয়ে বহুগুন বেশি সুরক্ষিত এবং নির্ভরযোগ্য বলেই মত তাঁর।
২০২২ সালের অক্টোবর মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তরফে নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রা ই-রুপি লঞ্চ করা হয়েছিল। পাইলট প্রকল্প হিসাবেই এই ডিজিটাল মুদ্রা চালু হয়। রিজার্ভ ব্য়াঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ সম্প্রতি ভারতীয় ডিজিটাল মুদ্রার উপকারিতা ও ক্রিপ্টোকারেন্সির ঝুঁকির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, “যাঁরা ক্রিপ্টোকারেন্সিকে সমর্থন করে এটিকে সম্পদ বা আর্থিক পণ্য হিসাবে উল্লেখ করছেন, তাদের বলি, এই ক্রিপ্টোকারেন্সির কোনও মূল্য নেই।”
তাঁর বক্তব্য, “প্রত্যেকটি সম্পদ বা আর্থিক পণ্যের কিছু-না-কিছু মূল্য থাকে। কিন্তু ক্রিপ্টোর কোনও দামই নেই। বাজারে ক্রিপ্টোকারেন্সির যে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, তা সম্পূর্ণটাই সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে। প্রকৃতপক্ষে যার কোনও মূল্য নেই। যার আর্থিক অবস্থান সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাসের উপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে, তা আসলে জুয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে জুয়া খেলার অনুমতি নেই। আপনারা যদি জুয়ায় বৈধতা চান, তবে এটিকে জুয়া হিসাবেই গণ্য করতে হবে এবং জুয়ার জন্য বেশ কিছু নিয়মও চালু করতে হবে। তবে একথা বলতেই পারি যে, ক্রিপ্টোকারেন্সি আর্থিক পণ্য বা সম্পদ নয়।”
ভারতে যদি ক্রিপ্টোকারেন্সিকে বৈধতা দেওয়া হয়, তাহলে ভারতীয় অর্থনীতি ডলার দ্বারা অনেক বেশি করে প্রভাবিত ও পরিচালিত হবে বলেই মনে করছেন শক্তিকান্ত দাশ। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আর্থিক সম্পদ হিসাবে গণ্য করাটাই পুরোপুরি ভুল এবং এর লেনদেনে প্রভূত আর্থিক ঝুঁকি আর ব্যাপকভাবে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আরবিআই গভর্নর।
দেশের সাধারণ নাগরিকদেরও সতর্ক করে তিনি জানান, “বিশ্বাস করুন, এটা একেবারেই কোনও ভিত্তিহীন সতর্কবার্তা নয়। এক বছর আগেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছিল যে, এখন হোক বা পরবর্তীকালে, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে লেনদেনের ব্যবস্থা একদিন ভেঙে পড়বেই। যদি বিগত এক বছরের খতিয়ান দেখেন, তাহলেই সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝে যাবেন। আমার আর কিছু বলার দরকার নেই।”