সংক্ষিপ্ত

প্রথমে ‘বন্ধু’র সূত্র ধরে সোমার সাথে ‘ঘনিষ্ঠতা’, তারপর সোমার সূত্র ধরে আরও বহু ‘বান্ধবী’-র সাথে ‘ঘনিষ্ঠতা’। যুবনেতা কুন্তল ঘোষের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের সুলুক সন্ধান। 

নিমেষের মধ্যে ইডি দফতরে হাজির হওয়া এবং নিমেষের মধ্যেই গায়েব হয়ে যাওয়া, এইটুকু ছবিতেই চলতি সপ্তাহের ট্রেনডিং ‘রহস্যময়ী’ সোমা চক্রবর্তীকে চিনেছেন বঙ্গবাসী। এই সোমার নামই জড়িয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে। বিলাসবহুল পার্লারে বিদেশ থেকে ট্রেনিং নিয়ে এসে যাঁর নিজের ব্যবসা, তিনি হঠাৎ করেই কীভাবে ফুলেফেঁপে উঠতে থাকলেন সম্পত্তির দিক থেকে? কুন্তল ঘোষ যাঁকে নিজের ‘বান্ধবী’ বলে পরিচয় দিয়েছেন, তাঁকে কেন দফায় দফায় দিয়ে দিলেন লক্ষ লক্ষ টাকা? এত সব প্রশ্নের মাঝেই ঘোরাফেরা করছে সোমার প্রকৃত পরিচয় এবং তাঁর সূত্র ধরে কুন্তলের অগুন্তি ‘বান্ধবী’-র খোঁজ।

জানা গেছে, সল্টলেক সিটি সেন্টারের কাছে একটি অভিজাত মলে নেল আর্ট পার্লার ছিল সোমা চক্রবর্তীর। নখের সজ্জা ছাড়াও বিভিন্ন প্রসাধনীর শৈল্পিক কাজ সেখানে করতেন বহু কর্মীরা। এই পার্লারটির নাম ছিল নেল লাউঞ্জ অ্যাট সিসি, যার ট্যাগলাইন, ‘আসুন, পায়ের উপর পা তুলে বসুন এবং শ্যাম্পেনের গ্লাস হাতে উপভোগ করুন।’ নিজের পার্লারের একটি বিজ্ঞাপনে সোমা দাবি করেছিলেন যে, বিভিন্ন দেশ ঘুরে তিনি নখসজ্জার শিক্ষা অর্জন করে এসেছেন। তাঁর পার্লারে সেরা পরিষেবা দেওয়া হয়। কিন্তু, সেখানকার কর্মীদের দাবি, মালকিন কখনও পার্লারে আসেনই না। মাসে মাসে ফোন করে বিবিধ হিসেব-নিকেশের খোঁজ নিয়ে নেন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হল, তাহলে এখানকার কর্মীদের নিয়োগ করে কে এবং দীর্ঘদিন ধরে এখানে অনুপস্থিত থাকলে তিনি আদতে কোথায় ব্যস্ত থাকেন? এই বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েই ইডি জানতে পেরেছে যে, সোমার এই পার্লারেই বিক্রি হত চাকরি। এখানেই চলত মোটা টাকার লেনদেন। দুর্নীতির অনেক ‘ডিল’-ও এখানেই চূড়ান্ত হত বলে খোঁজ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্কের কাছে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে সোমা চক্রবর্তীর। বর্তমানে সেখানে সপরিবারে থাকেন তাঁর কাকার ছেলে। ওই তরুণের দাবি, তাঁর জেঠতুতো দিদি একসময়ে নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে এই ফ্ল্যাটেই থাকতেন। কিন্তু, বেশ কয়েক বছর আগেই তিনি এখান থেকে চলে গিয়েছেন। সূত্রের খবর, সোমা চক্রবর্তী আসলে বিবাহিতা। প্রথমে ২০১৫ সালে কোনও এক ‘বন্ধু’র সূত্র ধরে এই সোমার সাথে পরিচয় হয় কুন্তল ঘোষের। তারপর বাড়ে ‘ঘনিষ্ঠতা’। ততদিনে কুন্তলের দুই শিশু-সন্তানের অ্যাকাউন্ট থেকে ৬ কোটি টাকা ঢুকে গিয়েছিল সোমার অ্যাকাউন্টে (যা পরে আবার অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায়)। এরপর ধীরে ধীরে সোমার সূত্রে আরও বহু ‘বান্ধবী’-র সাথে ‘ঘনিষ্ঠতা’ হয় হুগলীর যুবনেতার। বিভিন্ন পানশালা বা হোটেলে এই ‘বান্ধবী’-দের নিয়েই আনন্দ উদযাপনে মেতে থাকতেন কুন্তল। এঁদের মধ্যে আর কতজন নিয়োগ দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে গিয়েছিলেন, তা জানার জন্য সোমা চক্রবর্তীকে ফের তলব করেছে ইডি।

আরও পড়ুন-

ইডি-র হাতে সমর্পিত হয়ে গেলে আজই দিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডল, দোলের দিন সকালেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা
হিন্দু মন্দিরে মুসলিম দম্পতির নিকাহ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের উপস্থিতিতে বিয়ে দিলেন মৌলবিরা

বৃষ্টির পূর্বাভাসের মধ্যেই বেড়ে গেল কলকাতার তাপমাত্রা, দোলের দিন কেমন থাকবে বাংলার আবহাওয়া?