সংক্ষিপ্ত
ন’মাস ধরে বীরভূমের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট) কেটে টাকা তুলছিল ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। সেই সময় পাথর ব্যবসায়ী কিংবা লরি মালিকদের কোন সমস্যা ছিল না।
ফের তোলাবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন। রামপুরহাটের পর এবার মল্লারপুরে পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় পথ অবরোধ করলেন পাথর ব্যবসায়ীরা। বুধবার রাত থেকে পথ অবরোধের ফলে কয়েক হাজার লরি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে পরে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন পাথর ব্যবসায়ীরা।
ন’মাস ধরে বীরভূমের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট) কেটে টাকা তুলছিল ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। সেই সময় পাথর ব্যবসায়ী কিংবা লরি মালিকদের কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু অসাধু লোকজন প্রশাসনের কাছ থেকে সেই দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল ডিসিআর ছাপিয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি টাকা পাথর বোঝাই লরি থেকে আদায় করতে শুরু করেছে। এরই প্রতিবাদে জায়গায় জায়গায় আন্দোলনে নামছেন পাথর ব্যবসায়ী থেকে লরি মালিকেরা।
তোলাবাজির প্রতিবাদে তাঁরা মল্লারপুর – কাষ্ঠগড়া রাস্তা অবরোধ করে। পাথর ব্যবসায়ী বাসারুল শেখ, কৌশিক গোস্বামীরা বলেন, “আগে সরকারি কর্মীরা ডিসিআর কাটতেন। তখন আসল কাগজ হাতে পেতাম। টাকা কম লাগত। এখন টুলু মণ্ডল নামে একজন দায়িত্ব নিয়ে নিজের লোকজন দিয়ে টাকা আদায় করছে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে যে কাগজ দিচ্ছে সেটাও নকল। আমরা চাই সরকারি ডিসিআর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকরাই আদায় করুক”।
ময়ূরেশ্বর ১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শ্রীকান্ত দে বলেন, “ওখানে অফিসাররা বসে আছেন। তবে মাসরা এলাকায় যে গেট রয়েছে সেটা রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের অধীনে পড়ছে। বাকিটা জেলা শাসক কিংবা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলুন”।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই ডিসিআর গেট ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের অধীনে থাকার কথা। কিন্তু কোথায় আছে সেটা আমার কাছে কোন খবর নেই”। অভিজিৎবাবু নিজে সরকারি অর্ডারে সাক্ষর করলেও তিনি নিজেই জানেন না কোথায় ডিসিআর গেট রয়েছে। এনিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা। তিনি বলেন, “প্রশাসনের মদতেই তৃণমূলের নেতারা ডিসিআরের নামে তোলাবাজি করছে। আমরা প্রশাসনকে বলব অবিলম্বে তোলাবাজি বন্ধ করুন। নয়তো আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব”।
প্রসঙ্গত, বীরভূম জেলায় পাথর শিল্পাঞ্চলে ছয়টি ডিসিআর গেট রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচামী, রায়পুর এবং শালবাদরা ডিসিআর গেট দেখভাল করেন সিউড়ির এক তৃণমূল নেতা। তার সিউড়ির বাড়িতে সিবিআই – ইডি ইতিমধ্যে তল্লাশি চালিয়েছে। তাকেই ফের তিনটি গেটের তোলার অলিখিত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রামপুরহাট, নলহাটি এবং রাজগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিন তৃণমূল নেতাকে। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীনে গোয়ালা গ্রামে ডিসিআর গেট উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সেই গেট করা হয়েছে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের অধীন মাসরা গ্রামে।