সংক্ষিপ্ত

Suvendu Adhikari on Murshidabad: ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলা। দফায় দফায় অশান্তি ছড়ায়। 

Suvendu Adhikari on Murshidabad: ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলা। দফায় দফায় অশান্তির জেরে খবরের শিরোনামে ছিল মুর্শিদাবাদ (Murshidabad News)। অশান্তির মধ্যে পড়ে খুন হতে হয়েছে বাবা-ছেলেকে। মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদের সেই ঘটনায় নিহত দুই পরিবারের সঙ্গে শনিবার দেখা করতে যান বিরোধী দললনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)

জানা গিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক শর্ত মেনে শনিবার মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari News)। দেখা করেন সেদিনের অশান্তির ঘটনায় খুন হওয়া বাবা-ছেলের পরিবারের সঙ্গে। সেখানে পরিবারের হাতে তিনি ১০ লক্ষ ১ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। সেই সাহায্য গ্রহণ করে মৃতদের পরিবার। এরপর নিহতদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ''আমি মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ ১ হাজার টাকা করে দিয়েছি। ওঁরা গ্রহণ করেছেন। এই পরিবার নাকি সিপিএম বলেছিল। প্রমাণ হয়ে গেল পরিবার কার।''

শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেন, ''আমি হিন্দু হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছি। এটাই আমার পরম প্রাপ্তি।'' যদিও রাজ্য সরকারের তরফে আগেই ওই পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুদান নিতে নারাজ ছিল নিহতদের পরিবার। এদিকে শনিবার শুভেন্দুর হাত থেকে আর্থিক সাহায্য নেওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, পরিবার সরকারি সাহায্য প্রত্যাখান করে কোনও নেতা বা রাজনৈতিক দলের আর্থিক সাহায্য নেওয়ার পিছনে কি রাজনীতি আছে? কেন সরকারি সাহায্য নিতে চাইলেন না তাঁরা? কেউ কি তাঁদের প্ররোচনা দিয়েছে? যদিও এই সব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ মৃতদের পরিবার।

অন্যদিকে, অশান্তির পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়ে লুকিয়ে ছিল ওড়িশার ঝাড়সুগুড়া এলাকায়। কিন্তু পুলিশি অভিযানে শেষরক্ষা হল না আর। মুর্শিদাবাদ কাণ্ডে এসটিএফের জালে ধরা পড়ল আরও দুস্কৃতীরা। জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে খুনের ঘটনায়য় অন্যতম অভিযুক্ত জিয়াউল শেখের দুই ছেলেকে আটক করেছে বেঙ্গল এসটিএফ। ওড়িশার ঝাড়সুগুড়া থেকে আটক করা হয়েছে আরও ১৩ জনকে। মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনার পর থেকেই তারা ঝাড়সুগুড়ায় গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

ওয়াকফ আইনের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে অশান্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকায়। জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও গুলি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বেঙ্গল পুলিশ ও এসটিএফের তরফে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয় ওড়িশার ঝাড়সুগুড়ার বন্ধাবাহাল এলাকায়। সেখান থেকেই জিয়াউলের দুই ছেলে সহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

 

 

ওয়াকফ ইস্যুতে গত ১১ এপ্রিলের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকা। অশান্ত মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে বিএসএফ-এর স্থায়ী ক্যাম্প বসানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। আগেই মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি সরজমিনে দেখে গিয়েছেন এডিজি, ডিজি। তারপরেও প্রকাশ্যে আসে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখনও চলছে কড়া পাহারা। 

প্রসঙ্গত, ওয়াকফ (সংশোধন) আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় ১১ এপ্রিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুর্শিদাবাদ জেলায় হিংস শুরু হয়। প্রতিবাদটি হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, যার ফলে দু'জন নিহত, বেশ কয়েকজন আহত এবং ব্যাপক সম্পত্তির ক্ষতি হয়, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ নিরাপত্তার জন্য তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওয়াকফ (সংশোধন) আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি সহ অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে পড়ে এবং অগ্নিসংযোগ, পাথর নিক্ষেপ এবং রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।