সংক্ষিপ্ত
কোলাঘাটের নামালবাড় গ্রামের শেখ জহুর আলি, মুসিবুল পাখিরা, জয়নাল পাখিরা এই তিন শ্রমিক মার্বেল কাজের জন্য ভুবনেশ্বরের উদ্দেশ্যে করমন্ডল এক্সপ্রেসে করেই যাচ্ছিল। তার পরেই তাদের আর খোঁজ মেলেনি।
ঘুম উড়েছে। টিভির পর্দায় চোখ রেখে নিদ্রাহীন রাত কাটছে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার অন্তর্গত নামালবাড় গ্রামের। এই গ্রাম থেকেই তিনজন শ্রমিক ভিন রাজ্যে রোজগারের তাগিদে কাজের জন্য করমন্ডল এক্সপ্রেসে করেই যাচ্ছিলেন। ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেই করমন্ডল এক্সপ্রেস। যেখানে মৃত্যুর সারি শিহরণ জাগিয়ে তুলেছে গোটা দেশের। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সেই করমন্ডল এক্সপ্রেসের করে যাওয়া তিন শ্রমিকের এখনো খোঁজ মেলেনি।
কোলাঘাটের নামালবাড় গ্রামের শেখ জহুর আলি, মুসিবুল পাখিরা, জয়নাল পাখিরা এই তিন শ্রমিক মার্বেল কাজের জন্য ভুবনেশ্বরের উদ্দেশ্যে করমন্ডল এক্সপ্রেসে করেই যাচ্ছিল। তার পরেই তাদের আর খোঁজ মেলেনি। জীবিত কিংবা মৃত তাও জানে না এই শ্রমিকদের পরিবার। যার ফলে এই তিন পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, আদৌ তাঁদের বাড়ির মানুষ সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরবে তো তা নিয়েই সংশয়ে রয়েছে তিন পরিবার। তিনজনই বিবাহিত, তিন জনেরই ছোট ছোট সন্তান রয়েছে।
এই তিন শ্রমিকের পরিবার পরিজনেরা ট্রেন দুর্ঘটনার মর্মান্তিক খবর পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়ে, দুশ্চিন্তার মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন তাঁরা। পাড়া-প্রতিবেশীরা ভিড় জমাতে শুরু করে তাদের বাড়ির সামনে। তাঁরাও সকলে চাইছেন তাদের প্রতিবেশী তিন যুবক জীবিত অবস্থায় যেন বাড়ি ফিরে আসেন।
এদিকে, করমন্ডল এক্সপ্রেসে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে প্রায় ৩০০। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ওড়িশার বালেশ্বর। এই শহরের বাহাঙ্গা বাজারের কাছে একের পর এক ধাক্কায় লাইনচ্যুত হয়েছে পর পর ৩টি ট্রেন। শুক্রবার রাত থেকেই এলাকা জুড়ে মৃতদেহের স্তূপ। স্থানীয় মানুষরা দাবি করছেন, মোট ২০টি বগি উলটে যাওয়ায় যত মানুষ মারা গিয়েছেন, সেই সংখ্যা মোটেই পাঁচশোর কম নয়। শুক্রবার থেকে ঘটনাস্থলেই রয়েছে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ কাজের প্রতিটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের খোঁজ নিচ্ছেন তিনি। রবিবার দুপুরে টুইট করে জানিয়েছেন বেলা বারোটা বেজে পাঁচ মিনিটে ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা গিয়েছে।
শনিবারও দিনভর ঘটনাস্থলেই দেখা গিয়েছে অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। সেখানেই একাধিকবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। তিনি জানান 'ইলেকট্রনিং ইন্টারলকিং সিস্টেম পরিবর্তনের কারণেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে'।
দুর্ঘটনার জেরে প্রচুর ট্রেন বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরাও । এই পরিস্থিতিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায় ততই মঙ্গল। শনিবার রাতে অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন,'উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাত থেকেই রেললাইন পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে । রবিবার সকাল থেকে লাইন পরিষ্কার, লাইন পুনর্নির্মাণ এবং ওভারহেড তারে বিদ্যুতের কাজ চলবে। সোমবার সকাল থেকে শুরু হবে সিগন্যালিং সিস্টেম পুনরুদ্ধারের কাজ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করা করা হচ্ছে সমস্ত কাজ।'